Monday, March 14, 2011

ব্র্যাকেট ৭

ভাঙা আয়নায় শোধন সামগ্রী
চুমুর বিরোধাভাস
সেও এক গলি
যেখানে দমকল ঢোকে না
ফল মার্কেটের ভোঁতা হাওয়া
গাঁদাফুলও কাম্য কাম্য মনে হয়

এসময় বসময়
বসন্ত ধুঁয়াধার লাগে
রাত তিনটেয় ধড়ফড় করে উঠি,
এক বাঞ্চোত কোকিল আর এক হারামী
পিউকাহা
প্রেম ঢাউস হয়ে ওঠে
গুঙিয়ে ওঠে সিরাপগ্রন্থি

ওকে খানিকটা মন্দ করে দে মৃদু করে দে
--
তারপর শুধুই নির্মাণ হয়ে থেকে যায় দোতলার প্রেরণা আর বিলম্বিত ফল বসন্তে ঝরে । আমার সমস্ত অনুমান, পদ্ধতি, অজৈব টেক্সচার উশৃঙ্খল হয়ে ওঠে । কোথাও সাঁতারপটু ভাষার শরীরে ঘাই মারে ডুবন্ত ভাষা ।

ফলের ভেতর স্তিমিত হয়ে আছে খুলে দেখানোর বীজ
বীজের ভেতর নস্ত্য এপ্রন
সতর্ক হয়ে ওঠা গোধূলি ও নিয়মিত
সাড়ে নটার পুল পারাপার

এই আমার অবিকল ভাষা-- যে ভাষায় আর্ট ও ইন্ডাস্ট্রি দু’ই শিল্প । দীর্ঘাকায় হয়ে ওঠে খনিজ বেগুন, বোঁটা ও সংলগ্ন কাঁটা, বিজন হয়ে ওঠে । পরিমাপগ্রস্ত হয়ে ওঠে ।

আমার কাল্পনিক হেতুর পাটায় নির্লিপ্ত হয়ে ওঠে দড়ি ও ওলন, অন্ধ কর্নি । ব্র্যাকেটশহর আমি ঠিক কোথায় গাঁথব এই নতি, নান্দনিক দোলনের আভা ! কোন শান্ত কঙ্ক্রীটে ধীর ও অনিবার্য হয়ে উঠবে সমস্ত আকস্মিকতার মূল্যবোধ, আমার হেরে যাওয়ার স্টাইল ।

--

ব্র্যাকেটশহরে
তামাশাপন্থী বাঘ আর তাঁর
পেডান্টিক নড়ন
বিশ্বাস ভাঙতে ভাঙতে পাথর
নিজেই হয়ে ওঠে বেলে ও হলুদ
সুক্ষ রন্ধ্রগুলো ভরে ওঠে কেতাবী গর্জনে
হলুদের পাশে বিস্মিত হয়ে আছে
বাকী যা হলুদ
বসেছে হলুদ বাঘ হলুদ খোঁপায়

আমার চোখের পাতা নড়ছে না

--
গাঢ় হয়ে উঠছে বৃষ্টি
অভ্যস্থ হয়ে উঠছে
ব্যর্থ হয়ে উঠছে

এ সমস্তই এক অসমাপ্ত বিছানার কথা
যে জানে গুছিয়ে তোলার মত হাত নেই
বৃষ্টির দিনে দরজায় অভ্রান্ত খটখট নেই
হস্তান্তর বলে কিছু নেই
আস্তিন আর তুরুপ এই সবই পলায়নবাদীদের নিজস্ব স্বান্তনা

দস্তানা কড়ায় ঝুলিয়ে
আঙ্গুলেরা তোয়ালে খুঁজছে
--
আমার প্রকাশভঙ্গীর মধ্য দিয়ে ঘরঘর করে যাচ্ছে
লম্বা মালগাড়ি
মালগাড়ির মধ্যে ভেসে যাচ্ছে তামাক ও কমলালেবুর নির্যাস
পরিত্যক্ত ছাউনিগুলো মাতাল হয়ে উঠছে
ধীর ও বিস্মিত প্রকাশ হয়ে উঠছে
এও এক অন্তর্বর্তী বারান্দার কথা
যে প্ররোচনা দেয় চলনসই বৃক্ষদের
বলে --এইবার চীয়ারবিথীকা হয়ে ওঠো
অনুপম পমপম

প্রার্থনা ও কুঠার ছাপিয়ে উঠছে কুকারের সিটী
হিংস্র হয়ে উঠছে কুমড়ো সেদ্ধ, মান কচু, উচ্ছে সেদ্ধ
--
মালগাড়ি ও রান্নাঘরের পর আবার
বৃষ্টিতে ফিরে আসি
এখন বৃষ্টি নেই
রোদ নেই
ভেজবার প্রশ্ন নেই
শুকিয়ে ওঠার প্রয়োজন নেই
যা নেই তাই চিহ্নক
চিহ্নিত বস্তুসমূহে
যার চওড়াবরণ বোঝা যায়
--
এ সমস্তই এক অসমাপ্ত কাচের জানলার কথা
যিনি তাঁর সমূদয় নিয়ে বিছানা হওয়ার
কথা ভাবেন ও ঘষটে ঘষটে
নিজেকে অনচ্ছ করে তোলেন

চিহ্নগুলি মাথা গলিয়ে দিচ্ছে অস্তিত্বে
তাদের পিঠের কাচ ডুকরে উঠছে
--

মিঃ বীন বললেন –Can you give shape to an idea unless it’s dead ?

চকিত অতিক্রমী যে আলো
সেই আলো তোমাকে দেখেনি ভালো করে
তোমার কাছের ধীর ও লেপ্টে থাকা আলো

সেই আলো বিপজ্জনক
ছায়া হাতে স্যাডিস্ট ভাস্কর হয়ে ওঠে

উদ্দেশ্যমূলক ভাবে ঘাম গড়তে ভুলে যায়

এইসব কথা ডাঙার বিপক্ষে

ঢিল পড়া পুকুরের জলে ওঁত পেতে থাকেন পিকাসো
গতকাল
তাঁর সাথে কথা হয়েছিল
ধারণা নিয়ে
ধারণাপূর্ব অনুভূতি নিয়ে
লালাগ্রন্থি নিয়ে
যা তাজা রুটি বা বর্ষার আস্তাকুড়
যে কোন তীব্র গন্ধে প্রবাহিত হয়

--
তথাগত বললেন -- যে কোন বস্তুই একটি ঘণ ও আকরিক গুণ । এই গুণ রোপণ করো ধনুকে ও বন্দুকের ব্রীচে । এই গুণগান থেকে তীব্র ছুটে যাওয়া ভাব, যার গতি মিনিমাম সেকেন্ডে ৩৪৪ মিটার সেই হলো প্রকৃত শব্দভেদী । যা অর্থভেদেও সক্ষম । এই হলো বস্তুবাদের গোড়ার কথা ।
আমি বলতে পারিনি-- হে তথাগত, প্রভাবিত হওয়ার জন্য যে অন্তর্জাত নৈপুণ্য লাগে, আমি তা হারিয়ে ফেলেছি

সঙ্ঘবদ্ধ জলে
জলদলে

রাত্রি তিনটের পরে এগোতে রিফিউজ করেছে যে ঘড়িগুলি, সেই সব ঘড়ি আমার আত্মীয় ছিল । তারা বায়ু, সূর্য, বালু, ফুল ও জলের মত গতি ও দিশাশীল ছিল না । আমি যা বলতে পারি নি-- সেই সবই ভাববাদের গোড়ার কথা ।

যে কোন সঙ্ঘবদ্ধ জলে, জলদলে, জলকণাগুলি নিজস্ব মৌলতাহীন । জলকণার স্বভাবজ যে জল্কনা – যার ওপর টুকটাক ওড়ে খেলুড়ে ফড়িং । সেই ফড়িং জলাশয়ের ওপর চতুর ও নিবিষ্ট হয়, প্রজনন হেতু । এই কথা অদ্বৈতবাদের গোড়ার ।

দ্বৈতবাদ নিষিদ্ধ ব্র্যাকেটশহরে ।
--

Mr. bean said – All realizations are interpretation of data acquired by your senses. Since, all the senses are suspect, realizations attained through them are thus uncertain, suspect.

বানচাল হয়ে যাওয়া
হেঁসেল গণিকালয়ে
অপরিহার্য ভুল
এই ভুল নির্মাণে লেগেছে
ধারা ও ধারণায়
ধারণাজনিত সমস্ত গঠনে
রোদের পিঠের পাশে
পিঠ পাতা হয়েছে আমার
আমি সেই ফলার নিকটে
কারণ রাখিনি

লক্ষণীয়, পৃথিবীর সমস্ত জখম
ভিন্ন ও দূরপরায়ন
শুধু তার প্রবণতাগুলি
সমূহ গড়ার কাজে লাগে

রোদের পিঠের পাশে
পিঠ পাতা রয়েছে আমার
আর সূর্যোদয়ের বাঁ পাশে সন্দেহবাতিক এক সূর্যাস্ত উঠছে
--
আমরা বিষন্ন ছিলাম
আমাদের ওপর তৃপ্তির ছায়া পড়েছিল
সাপের খোলসে ভ্রান্ত নেউলের ছায়া
প্রকৃত অসম্ভবের গায়ে তথ্যের ছায়া পড়েছিল

এই এক অসম্পূর্ণ বিভাজিকা
যার গতি ও মতির দ্রুতি
ধরতে অসামর্থ্য চোখ
ফলে সমস্ত মাপে ও নিবিড়ানুপাতে
যেই বিভাজিকা অথর্ববিশেষ
তার ছায়া আমার অভেদে

এক বালুঘড়ির ভিতরে হয়েছিল আমাদের নীরবতা রাখা
আমাদের ছায়াগুলো কথা বলছিল
--
“এই সেই রোমীয় পথ, যার ছায়া পথপার্শ্বে পড়ে, কর্ষণ করে অটবীর মূল, অতসীর ঝুঁটি ও চকিতে ভ্রাম্যমান হয় । এই সেই ছায়া যা আজও মূল্যবান” -- রবি ঠাকুর এই গান বেঁধেছিলেন ১৯২২ খ্রীস্টাব্দে । সুর ; মিশ্র ভূপালি ঠুংরি,পর্যায়; বিবিধ (সূত্রঃ মিতবিতান, পৃঃ ৩২৬)। জনশ্রুতি, এই গান আদতে লেখেন বাবু কমল চক্রবর্তী ২০০৩ খ্রীস্টাব্দে এবং অদ্ভুত দূরদর্শী রবি ঠাকুর ১৯২২-তে বসে এই গান হড়প/আত্মসাৎ করেন । ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এই ছায়ার জরীপকর্তা নিয়োগ করেন জ্যঁ লুক গোদার-কে । এই নিরন্তর হিংস্র ছায়ার একক নিয়ে ১৫৩৩ খ্রীস্টাব্দে গোদার সাহেব নির্মাণ করেন এক অবিস্মরণীয় তথ্যচিত্র “Shadow building : A whispering art” যা পৃথিবীর সর্বপ্রথম ক্যালাইডোস্কোপ ।
গতকাল আমার দেখা হয়েছিল ছায়াটির সাথে ক্যামেরার দোকানে । ছায়াটির পরণে ছিল তরুণ বর্ষাতি । গতকাল পৃথিবীর কোন কোণায় বৃষ্টিপাত হয়নি – যদিও রেডিয়োতে অশনিসংকেত হয়েছিল ।
--
সৌর মন্ডল বললেন – একটা বিড়ি দিন –আমি দেখছি তাঁর গলার ওপর খেলা করছে কষ আর গীটারের তার । সৌর মন্ডল বললেন -- আর ভালো লাগে না, পোঁদে পোঁদে অপার্থিব লগ্নীকরণ ও জ্বালা । জ্বালা মোশাই ! আপনাদের সামুদায়িক রেশন কার্ডের ছাল ঘুনসি ভেদ করে আমার আনুমানিক পিত্তাশয়ে ঢুকে গেছে । পাথর মোশাই পাথর । ঘুঘনি খেয়েছেন কী পাউরুটি হয়েছেন । তারপর আপনার ঘুঘনি আপনার পাউরুটি ক্যোঁৎ ক্যোঁৎ করে কণ্বমুনির ছাগলের পেটে, শালো, ছাগলের পেটে ব্যাথা বোলে কথা । শকুন্তলা মারাবেন না বলে দিচ্ছি । অভিজ্ঞান যত খুশী দাগান পোঁদে, কিডনিতে, রাজা তো হবেন না রাজা আপনাকে চেখে চাউমিন করে দেবে আর পেচ্ছাপ মোশাই পেচ্ছাপই, চাহে সে পেচ্ছাপ গোলাপজল খেয়েই হোক আর কাতলার পেটে বুড়বুড়ি মেরেই হোক । দেখবেন এর পর বিরহী যক্ষিণী কেমন মেঘদূতম দিয়ে চুরুট ধরায় । শালোর কবিতার শখ ! দিন মোশাই এক খানা বিড়ি ।
(সূত্রঃ খান্ডবদাহন, বনপর্ব ; সম্পূর্ণ মহাভারত বাই পঞ্চানন হালদার, সং ; ১৯)
--
ব্র্যাকেটশহর
আমি ভাবি সমস্ত ছায়াই
পরিখাসক্ত
চারতলা থেকে যার ঝাঁপ
ফ্রেমবন্দী হয়
বাঘ ডাকে নয়ানজুলিতে
বাঘ ডেকে ওঠে বাথরুমে
সে ডাকের ছায়াগুলি
সমস্ত সৌরমন্ডলের
দর্পণপ্রসূত
বাঘ ডেকে ওঠে আর
নির্বিকার বিড়িখানি জঘনে জঘনে

জ্বলে
নেভে
জ্বলে
--

4 comments:

  1. এ এক এমন কবিতা যার সামনে টুপি খুলে [আমি রোজ টুপি পরি বলেই বোধহয় আরো, নিজের টুপি নিজে পরাই ভালো যেহেতু] মাথা নামিয়ে দাঁড়াতে হয়। হে যেখানকার যত বাঙালী কবি, আগামীর আদর্শ কবিতা, চূড়ান্ত কবিতা কেমন জানতে হলে এই উদাহরণকে অনুসরণ করতেই হবে।

    এমন কবিতা সচরাচর হয় না, স্রষ্টার দ্বারাও সবসময় নয়।

    একটা ছোটো প্রশ্ন - ওলোন কি ? "রজ্জু" শব্দটা ওই পংতিতে আনা যেত না?

    ReplyDelete
  2. Aryanilda, “olon” holo raajmistri/mason er depth maapaar Jantro… laTTur (laaTim) moto dekhte, mathay doRi… eTaa diye plane bojhaa Jaay… “Olon-doRi” eibhaabe kothaaTaa byabohaar koraa hoy, taai rojju naa likhe doRi lekhaa…korNi is a mason’s trowel.

    baaki byapaare, aami abhubhuto… kintu lojja royechhe… mane erakam oneke likhte paarbe… I guess,… mane prachur Talent dekhi… khub obvious talents….

    This is not an auto-written piece… consciously lekhaa… pratham 4-5Taa part likhe… segulo ke question koraa … taar elements ebong elementgulor abosthaan niye question…eisab… saathe ei chintaa gulo maathaay niyei onno lekhaa poRaa… aami prachur Swadesh, Aryanil, Arghya, shankar, Arun Mitra… even Nripendrakrishna-r besh jolo prabandha o Budhdhadev Basur prabandho-o poRechhi…shakti…Shubhra..samasto…
    aabaar lekhaa aabaar taake question koraa… take onno bhaabe dekhaa… bibhinno situation-e lekhaa ke poRaa… likhte likhte… ojaantei Je maatraa-gulo kabitaay laage… seigulo ke sachetan bhaabe ber kore take express koraa…

    so I believe, it can be easily done, the trick is to think like a prose-writer (a flexible, non-judgemental prose writer who can even accept absurdity on its face value and still not judge it) and try to express it in a poetry…taachhaaRaa PB andolon-er shwetpatro-o khub kaaje diyechhe

    ReplyDelete
  3. এই ব্রাকেটশহর এক সঙ্গে সবটা পড়লে এত অদ্ভুত একটা ফিলিং হয় ঠিক লিখে বোঝানো যায় না। আমার তো আবার টুপিও নেই

    একটা কথা জিজ্ঞেস করার ছিল সব্য, শুরুর দিকে, কোকিল ও পিউকাহাকে যেভাবে সম্বোধন করা হল, তা কি কিছুটা স্টান্ট হিসেবে ব্যবহার করেন? মানে বলতে চাইছি চমক?

    ReplyDelete
  4. chomok ! stunt ! gimmick ! ek-kaale kortaam... ekhon saadhonaa korchhi taaRaanor... emon ki jakhan yaarki-o kori cheshTaa kori jeno haabaa yaarki hoy :-)...

    naa oi part-Taa raat 3-Tey ghum bhenge mone howaa sakaale lekhaa... satyi ekhaane raat 1-1.30 dekhe dui paagol paakhir loRaai... e bole aamaay dekh o bole aamaay !!! bhoyongkor...

    goTaa sheet-kaal pNechar Daak chhilo ekhon ei-duTo...pNecha taao sajhya koraa Jaay aar ki....

    ReplyDelete