Monday, September 23, 2013

আরও একটি ব্যক্তিগত কবিতা / নীলাব্জ চক্রবর্তী

ওই ২৪ টা ফ্রেম কখনোই পরপর এলো না
আসলে আমরা জানতামই না
ক্যামেরা           কোথায় বসবে
আয়না            কোথায় বসবে না
ত্রিমাত্রিক কাগজে লিখতে বসার এই এক অসুবিধে
এক একটা শব্দ
তাদের জন্য নির্দিষ্ট করে রাখা
সারফেস                   ছেড়ে
অনেক            ভেতরে ঢুকে যায়
তখনো বৈভবী নামে কাউকে চিনতাম না
আর রামধনুর সমীকরণ ঠিক কী হবে
কাঠের দরজার ওপাশে
অন্যরকম আলো
আর গুঁড়ো গুঁড়ো অক্ষর
যার সবটাই তেতো
অথচ মুখোশ কারখানার কথা
ঢের আগেই লেখা হয়ে গেছিলো
এখন মৌলিক বলতে
ফেজ ডিফারেন্সটুকুই পড়ে আছে
বন্ধুতালিকা লুকিয়ে রাখার কথা
প্রথম কার মাথায় এসেছিলো
তখন আর আমাদের
মনে থাকবে না
স্যুটকেসের কোটরের ভেতর
যেটা নড়ছে চড়ছে তার নাম স্মৃতি
আর অ্যাতোদিনে আপনারাও ভুলে গ্যাছেন
সেই আওয়াজটার নাম ফ্যান্টম অব লিবার্টি ছিলো কি না...

Friday, August 23, 2013

সম্পর্ক / নীলাব্জ চক্রবর্তী



সম্পর্কের ভেতর দিয়ে একটা তেকোনা আয়না
পারাপার করছে               তার সেপিয়ায়
কোনাকুনি
এগিয়ে আসছে
                পিছিয়ে যাচ্ছে
প্রাচীন মধ্যমাসূত্র
বরং সমনৈকট্যের কথায়
দূরত্ব                   বজায় রাখুন
বরং ধাতব বিরতির কথায়
শনাক্ত করা হোক
আঙুল রাখার রাস্তা
কতটা অযৌন হয়ে যাচ্ছে সেই ম্যাজিক
এইভাবে
আমার অনার্যনীল মিঠেকড়া কবিতার লাইনগুলোর
খয়েরী ছায়ায়
আপাতত স্থির হয়ে থাকা টোটেমের ফুঁ
ক্যামোন উদ্বায়ী নুনঘরের ভেতর
ভুলে যাচ্ছে রং ফেলে আসার নিনজা টেকনিক...

Monday, May 6, 2013

স্মৃতি

সোমনাথ সেন


খুব সামান্য ছবিও মাঝে মাঝে আপত্তিকর মনে হয়
এতটুকুই আমাদের ভারসাম্য
বাকী বিশ্বাসের দিকে স্মৃতি গভীরতা পায়

গোলাকার অবস্থা শুধু স্তনেরই ধারণা দেয় না, নিতম্বেরও দেয়
নরম আলোর দিকে সামান্য রাস্তা
আর দিকে দিকে পুরুষালী বুক স্ফীত হয়ে এলে
                                        প্রকট হিজড়ের গান শুরু হয়
এইটুকু তরঙ্গ নিয়ে ছুটে চলে ট্রেন
আর যে সব কিশোরী এইমাত্র উন্মত্ত হল – বুকে ও নিতম্বে
সামান্য জ্যা টেনে
আমরা মেপে নিচ্ছি সেইসব অন্তর্বাসের পরিমাপ

এই মুহূর্তে মানুষও তার প্রতিচ্ছবি দ্যাখে
এই আমাদের সীমারেখা, এই আমাদের সীমাবদ্ধতা -
বাকী থিয়োরেম থেকে ভ্রূণের মুখোশ পর্যন্ত
                 ধীরে ধীরে আবছা হতে থাকে কেলাসিত তরল
                                                                          শব্দ হীন
যদিও এইসব প্রবণতা শুধুমাত্র স্মৃতি সাপেক্ষ নয়
কখনো কখনো এক লুকিয়ে থাকা সামঞ্জস্য, এক রুমালের
গন্ধ নিয়ে যৌন হতে থাকে

আমাদের প্রস্তাবিত মুখ-বদল ঘটে যায়
ছড়িয়ে থাকা মানুষের যত মানচিত্র থাকে, যত ভিড়ে ঠাসা রাস্তাঘাট
প্রতিটি স্মৃতির ভেতর
                              গভীর হতে থাকে নলকূপ
সামান্য আকর মিশে গেলে জলও রক্তাভ হয়

Monday, April 22, 2013

যৌন প্রণালী

সোমনাথ সেন


ঠিক এভাবে জমে ওঠা স্বাভাবিক
মাটির আনাচে কানাচে - সামান্য প্রবাহের জলকণা, অথবা বৃষ্টিপাতের
সামান্য ধারনায়
ভেসে থাকছে রেশম, গুটির ভিতর অন্ধকার নিয়ে এতদিনের
সূর্যাস্ত, প্রত্যেকের জানা ছিল -
তবুও শুধুমাত্র ধারনাটুকু কামানের গোলার মতো
                                      হাতড়ে বেড়াচ্ছে ধ্বংসস্তূপ
এইমাত্র মাটির রঙ পরিবর্তন হয়
হাওয়ারও- দীর্ঘদিনের লিপি হাতড়ে
কাঠের ঘোড়া থেকে বেরিয়ে আসে উত্থিত লিঙ্গ
অথচ এই সবকিছুই খুব স্বাভাবিক ছিল
ছিলার মত সামান্য হেরফের – আর তুমিও হরফ পালটে
উন্মুক্ত শরীর দেখালে সারাদিন

পৃথিবীতে কোথাও কি জলছাপের প্রয়োজন ছিল তাহলে?
অপর্যাপ্ত খনির ভিতর এই যে
ভুল ঠিকানা, সামান্য ব্যস্ততার এজলাসে এতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে পড়ল শহর –
অথচ আমাদের কারও জানা ছিল না
                খুব সামান্য আড়াল নিয়েও ধিকধিক করছে ক্যামোফ্লাজ
বাতিল দস্তাবেজ
আর এক এক করে খসে পড়ছে ছুটন্ত বোতাম

দূর থেকে বিস্তৃত জ্যা – শুধুমাত্র স্মৃতির ধারণা দেয়
নিলামের চেয়েও পর্যাপ্ত হয়ে ওঠা আরামকেদারার ঘাম – ঘুমন্ত
মানুষের চুলে
ভেসে যাচ্ছে বালিশ, বিছানা – এমনকি একটা গোটা শহর
রক্তপাতের মত পিচ্ছিল আর কিছুই নেই
এই যা একটা বাতিদান
স্টেপ বাই স্টেপ – মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে আঘাতের দিকে

অবশিষ্ট সবকিছুই ফাঁকা থেকে যায়
দু-একটা লিরিক পশুদের ধারণা দেয়, অসমান বাক্সের ভিতর
জমে থাকে লিপ্তপদ পিয়ানোর রিবনে রিবনে
শহরের শীত কমে এলে যৌনতা বাড়তে থাকে
ঘুম-জ্বরের দিক কাঁপানো আয়নায়


Sunday, April 21, 2013

চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত

'নতুন কবিতা'র বইমেলা-২০১৩ সংখ্যায় প্রকাশিত।
===================================

চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত
আর্যনীল মুখোপাধ্যায়

সে দেখেছিলো। বড় হবার পথে এইসব। দেখেছিলো মদে ঈষৎ লালফোলা মুখের বাবার রাগ আর নতুন করে বোঝা যায় না। রঙের পোঁচ বাড়ে না। কয়েক সেকেন্ড ঝড়ের আগের নিশ্চল বাবা আচমকা মাকে টেনে নিয়ে পাশের চিলেকুঠরী ঘরের খিল বন্ধ করে। মার চিৎকার সে ভাইবোনেদের কানে চিনির জলে ভেজা তুলো গুঁজে চাপা দেয়। বরফ জলে পরের দিন ভোরে সে মায়ের রক্তপশম কাচে। পড়শিদের ভিড়েই কাচে। আর কাঁপতে থাকে হিমে না লজ্জায় না ভয়ে!

আর চোখ দিয়ে তার কাচের পুঁজ পড়ে। পড়শিদের মহিলারা ভাবে সে নতুন রজস্বলা। তারা হাসে। আর একজন যে স্থূলকায়া সে এসে জড়িয়ে ধরে। পুঁজ পুছে দেয়। চোখের কোল শুকনো করে। আর কাচামহল ফাঁকা হলে তার কাচাকাপড় টেনে মেলে নিজেই দড়িতে দেয়। তাকে মনে করিয়ে দেয় আসছে সন্ধের তুষারপাতের কথা। তারপর সে তার মাথাটা। যত্নে কম। সোহাগে বেশি। টেনে বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে । আর এক সময় যখন এদিক ওদিক চেয়ে বুকের জালিবাঁধন খুলে নিজের মাইতে তার মুখ ঘষতে থাকে - জোজিমা আবার নতুন করে আতঙ্কে ডোবে। বাঁধন ছিঁড়ে বেরিয়ে আসে। বাড়ি পালায়। কাচা কাপড় শুকোবার আগে রাতের ঠান্ডা স্ফটিকে স্ফটিকে ভরে যায়।

সে আরো দেখেছিলো। তার বাবাকে। মাকে আস্তাবলে অশ্বপুরীষের খড়ের ওপর ক্রোধে ধাক্কা মেরে ফেলে দিতে। মায়ের চিৎকারের ওপর বাঁ হাতের থাবা মেরে নৈঃশব্দ্য সাময়িক। ততক্ষণে বাবার ডানহাত ডনের পুষ্ট লিঙ্গ সঞ্চালন করে। ডন যন্ত্রণায় বা উত্তেজনায় চিহিহি করে ওঠে বার কয়েক। একসময় বাবা দুহাতই ওপরে তুলে নেয় আর মায়ের বন্ধ্যা চিৎকার সাকার হতে না হতেই ডনের একরাশ বীর্যে তা ঢাকা পড়ে। খড়ের গাদায়, অশ্বপুরীষের মধ্যে শুয়ে ছটফট করা মা; মায়ের মুখ, ও বিশেষত চোখ সেই ক্ষার বীর্যে বন্ধ হয়ে যায়। কান্না যতক্ষণে বাঁধ ভাঙে বাবার অট্টহাসি তাকে সাপের মতো পরিবেষ্টন করে নিশ্চুপ করেছে। এসব সে দেখেছে। বারবার না হলেও এক আধবার। আর জোজিমার চোখ দিয়ে কাচের পুঁজের জন্মবৃত্তান্তও এখানে। এভাবেই।

=====================================
- এমন প্রায় দেখাই যায় না যে তোমার ছবির চরিত্ররা তাদের অবস্থার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করছে। একমাত্র “হোয়াইটি” ছবিতে এটা হয়, যেখানে এক দাস তার মণিবকে খুন করে পালায়... রাইনার ওয়ের্নার ফাসবিন্দার – হ্যাঁ, অথচ ছবিটা কিন্তু কালো মানুষদের সমালোচনা। কেননা তারা সবসময় দোনামনা করছে আর লড়তে ভুলে যাচ্ছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে। লোকটা খুন করে ঠিক, কিন্তু মরুভূমিতে গিয়ে লুকোয় তারপর, আর শেষে মরে, অন্যায় সম্বন্ধে সচেতন হয়ে ওঠার পরেও তার প্রতিক্রিয়া আসেনা................................. ছবির শেষে একটা এককক্রিয়া কোনো কিছু সমাধান করে না, বরং ছবিটাকে খারাপ করে। তাই আমার ছবিটা কিন্তু শেষমেশ কালোদের বিপরীতে যায়।
======================================


আর বাই দ্য ওয়ে, “ডন” ছিলো বাবার প্রিয় ঘোটক। মেয়েদের পেছনে পেছনে ঘুরলেও, কম্যুনিস্ট মাঝিদের ঠেক থেকে তাদের বর্জিতা বেশ্যাদের পরিত্যক্ত গোলাঘরে নিয়ে গিয়ে সরবে মজা করলেও, বাবার প্রধান অসুখ যে ছিলো “ঘোড়ারোগ” সেটা জানা যায় এইরকমই এক শীতে। যেবার কার্ডিনাল বেঞ্জামিনের সহিস তাদের সাজানো ফিটনের তিন নম্বর ঘোড়াটাকে চাবুক মারতে মারতে প্রায় আধাখানা শরীর মাটিতে। বাবা রাস্তায় ছিলো। কারখানার গেটে। কফিমাগ হাতে ব্রেকের সময়। সহিসের চাবুক কেড়ে নেয়। কাদাবরফের আস্তর সরিয়ে দেখায় ঘোড়ার পেছনের রাঙের চোট। হাড় তো ভেঙেছিলোই, ফ্যাকাশে রক্তে বরফকাদার প্রলেপে বেচারা অবলার ঠ্যাঙ অল্পগোলাপী হয়েছিলো। এইসময় মহামান্য বেঞ্জামিন বেরিয়ে আসে ও দয়ালু মর্মময় বাবার কৃপাহস্তের পরম প্রযোজনা দেখে ঘোড়াটা বাবাকে দান করে।

বাবাকে সে সেইসময় সাহায্য করেছিলো। সে। জোজিমা। পরম মমতায় ভালো করে তুলেছিলো ঘোড়াটাকে। কয়েক মাস রোজ। নিজেদের খাবার বাঁচিয়ে “ডন”, যা তার নাম হয়েছে ততোদিনে, তাকে খাইয়ে সুস্থ ক’রে তোলে। তারপর গোটা শহর একদিন বসন্তে – যেদিন নতুন চেরিফুলে সব পবিত্র পথঘাট সাদা – সেদিন গোটা পরিবার – ওরা ঘুরেছিলো বাবার তৈরি নতুন ঘোড়াগাড়িতে। খুরের শব্দে সেদিন গির্জার ঘন্টা চাপা পড়েছিলো। কাঁচাকাঠের গন্ধে সেদিন শীতের প্রার্থনায় বসন্তের মুখর উত্তরের সবটা শোনা যাচ্ছিলো। আর পরের দিন ভোরে প্রথম সে চড় খায় মায়ের হাতে। আর বাবার হাতে এমন মার... যা...

শহরপ্রান্তে বেশ কিছুটা দূরে গিয়ে সেদিন এক আজব দোকান থেকে বাবা তার কেনে, অদ্ভুত দেখতে বাটির মতো অ্যালুমিনামের কি যেন একটা – তার মাঝে আবার গোলগর্ত – আর একটা কাচের বলের মতো – তাকে নাকি “বাল্ব” বলে। ফিরে এসে ঘরে তাদের সেদিন প্রথম শিল্প আন্দোলন হয়। বাল্ব জ্বলে। অ্যালুমিনামের শেডের নিচে। রবীন্দ্রনাথের আলোবিষয়ক সমস্ত গান – যেটুকু অনুবাদে কানাঘুষোয় ততদিনে তাদের বাসায় পৌঁছেছে – সকল সেসব গান, তোমাকে লক্ষ্য করে দর্শক, গাওয়া হয়।
মা বানায় কড়াইশুটির সুরুয়া। ফোকাচ্চিয়া রুটি আসে। কানাডার এল। টেবিলের প্রার্থনা সেদিন কয়েক সেকেন্ডে সেরে তাদের কী সে আনন্দ! কী সে ভোগ! কী সে তৃপ্তি! আলোটা এমনিতেই ফিকে হয়ে আসে রাতে। কিন্তু বাবা নেভাতে দেয়নি। প্রথম দেখার জ্যোতি-উত্তাপ সবার মধ্যে ছিলো। আর সেই ফিকে হয়ে আসা আলোয় সে। জোজিমা। সামান্য দরজার এক প্রিজম্যাটিক চিলতে দিয়ে দেখেছিলো বিবদমান মানুষের আলোকপ্রাপ্ত-প্রাপ্তা সে নৈশ ভালোবাসা।
সেদিন সে। জোজিমা। বুঝেছিলো তার আর তার ভাইবোনদের জন্মরহস্য। বুঝেছিলো তাদের জন্মের নেপথ্যে নির্মমতা নয় বরং ঈশ্বরকে তাক লাগানো প্রেম ছিলো। মমতা। বাবা যে মাকে করছিলো এটা কখনো মনে হয়নি। হয়েছিলো পুরুষের ভালোবাসার বয়ান রচনা। তার মুদ্রার গড়ন দেখা। তার যত্নের গড়ে ওঠা। আর তাতে মিল দিয়ে, ছন্দ দিয়ে, লিরিককে গুছিয়ে দেওয়া নারীর গোটা আদবটাই তার সেদিন সেই প্রথম। সেদিন সে। জোজিমা। প্রথম নিজের যোনিতে নিজের আলতো হাত রাখে। মা-বাবাকে দেখতে দেখতে।
সেদিন সে। জোজিমা। আবার অবাক চোখে বাল্বের ওই বিস্ময়কর নতুন প্রযুক্তি-দ্যুতি আবার দেখে। তার মনে হয়েছিলো সত্যিকারের স্বপ্ন কারখানাতেই আসলে তৈরি হওয়া সম্ভব। লোহার কারখানায়। খনিজের কারখানায়। কাচের কারখানায়। শরীরের কারখানায়।

=================================
তুরেন্ত এরপর ব্যুনিউয়েলকে জিজ্ঞেস করলেন, “কামনার অস্বচ্ছ বস্তুটি তাহলে কি? ওই নারী? তার উরু-স্তন? না তার আত্মা?” ব্যুনিউয়েল – কে জানে? হয়তো তিনটেই। বা হয়তো নয়। হয়তো ফের্দিনান্দ যেমন খুঁজছে, তেমনি সেই মেয়েটি। বা হয়তো মেয়েটি দুভাবে খুঁজছে ওই দুই অভিনেত্রীর মধ্যে দিয়ে। আমি জানিনা। কামনার বস্তুটা তো অস্বচ্ছ, দুরুহ, তাই না ?
================================

সেদিন সে। জোজিমা। নিজের সদ্যোজাত বুক চেপে ধরতে গিয়েছিলো। দরজার গায়ে। আর তাতেই শব্দ হয়। দরজা নড়ে যায়। সরে যায়। এ ঘরের ফিকে বাল্ব বাবা-মায়ের চুমুর ওপর বিদ্যুৎ হয়। পরের দিন রবিবার। ঘুম থেকে উঠে টেবিলের কাছে যেতেই কেটলির ইঞ্জিন ধোঁয়ার সামনে থেকে সরে এসে মা সপাটে চড় মারে। আর টেবিলে চায়ের কাপ নিয়ে বসা বাবা... সাপের মতো তার সোনালী বেনী টেনে তাকে ভাইবোনদের খাটের ওপর ফেলে পিঠের ওপর বাঁ হাঁটু দিয়ে চেপে ধরে। সে প্রতিবাদ করেনি। শব্দ করেনি। সদ্য ভাঙা ঘুমের আঠায় সারা শরীর তখনো যে বিবশ! আর তা না হলেও সে চিরদিন পড়েই মার খাবার। বাঁ হাঁটু দিয়ে তাকে চেপে রেখে বাবা তার বেল্ট খোলে। ভাইবোনরা ততক্ষণে উঠে পড়েছে। এমনকি মিরান। যমজ ভাই মিরান। সেও তখন ষোলো। মাইনাস কয়েক মিনিট। সবার সামনে বাবা। শীতের ভোরের বাবা।

তাকে উপুড় করে স্কার্ট তুলে টেনে ইজের টেনে নামিয়ে দেয়। জোরে। তাতে ইজের ছেঁড়ে। ছোটোবোন শামীমা অভ্যাসবশত কচিহাতে চোখ ঢাকে। আর বাবা – আইভান সরকার - বেল্ট চালায় জোজিমার নগ্ন পশ্চাতে। দাগ পড়ে। লালদাগ। দগদগে হয়। পুরো এক সপ্তাহ সে ডিনারে টেবিলে বসতে পারেনি। উপুড় হয়ে শুয়ে শুয়ে খেয়েছে। কিন্তু সেটা বড় নয়।বাথরুম করার কি অসহ্য যন্ত্রণা! শুধু সুরুয়ার ওপর থাকা যাতে কম যেতে হয়। মা একটা সবুজ রঙের পাউডার দিচ্ছিলো যাতে বায়ুবৃদ্ধি না হয়, কেননা বায়ু-নির্গমনেও বেদনা। সহস্র সূচ যেন সেলাই মেশিন থেকে বেরিয়ে এসে তার নিতম্বে পিরানহা। মিরান বাবার ওপর ঝাঁপিয়ে না পড়লে সেদিন সকালে কি হতো সেসব দুশ্চিন্তাও নয়। অন্য একটা বরং। অন্য একটা কথা ভাবলে আজো তার দৃষ্টি ঝাপসা হয়। মায়ের ওপর রাগ বাড়ে বেশি। নিজের জন্মদিনটাকে জোর করে ইরেজার দিয়ে ঘষে ঘষে...তুলে দিতে...

মিরান যখন বাবার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে কেউ দেখেনি ঘরের দরজা অল্প ফাঁক হয়েছিলো। একটা মুখ ঢুকে এসেছিলো। গারসিয়ার মুখ। তার বাচ্চা মুখের ভারী চশমা। সেও কি দেখেছিলো ছাই! জোজিমা। সে তো তখনো দরজার দিকে ল্যাংটো আহত পশ্চাত দিয়ে বিছানায় মাথা রেখে আধা-মুর্চ্ছায়। কোনোদিন ঘনিষ্ঠ হবার আগেই গারসিয়া তার রক্তাক্ত নিতম্ব দেখলো এটা দুঃখ বেশি না যন্ত্রণা, অপমান বেশি না গ্লানি – এসব সে –জোজিমা - আজো ভাবে। ৯৮ বছরের কখনো বিকেল।

ততোদিনে মা আলোকচিত্রি হিসেবে বিখ্যাতা হয়ে উঠেছে জেলাশহরে। আর সে মায়ের সহকারী। সহচরীও। জ্যঁ-ক্লদ বাবুল তার বর্জিত দোকানের যে কন্টেসা ক্যামেরাটা মাকে দান করেছিলো, যে ক্যামেরা টিনের তোরঙ্গে মা লুকিয়ে রাখতো, বিয়েবার্ষিকীর শুকনো ফুল একটা, গভীর রাতে ক্যামেরার পাশে রেখে যেত, যেত সৌরভের ভিক্ষায়, দেখার চোখ যাতে সুগন্ধীও হয় সেই প্রার্থনায়; আর একবার রাগের মাথায় যে ক্যামেরা বাবা জোরজবস্তি চাইতে গেলে মা সেলাই হাতকল মাথার ওপর তুলে বলেছিলো – মেরে মাথা থেঁতো করে দেব – সেই ক্যামেরা যে ততদিনে মায়ের হাত, সেই মেচেতার হাত, যার সমস্ত অপহৃত কোমলতা কিভাবে যেন ফিরে এসেছে – সেই হাতে – সেই হাত যা অন্ধঘরের লালবাতির আভায় স্বপ্নের মতো।

============================================
সেই স্বপ্নের মতো যার কথা ইঙ্গমার বেয়ারম্যান বলতেন; নিজের শরীরের ভেতরটা দেখতে চাওয়ার কথা - ছেলেবেলায় যখন ওঁর স্কার্লেট-জ্বর হতো, জ্বরের ঘোরে ওই রকম দেখতেন, নিজের শরীরের ভেতরটা হাজারো রক্তাক্ত শেডে নির্মিত; হাজারো রক্তিমাভার বন্যায়, আলোকের ওই ঝর্ণাধারায় ধুইয়ে দেবার মতো; যা শেষ পর্যন্ত তিনি “ক্রাইস অ্যান্ড হুইস্পার্স” ছবিতে, কান্না ও ফিসফিসানির ছবিতে এক অনপনেয় ভাবনার মাধ্যমে, উপায়ে ব্যবহার করলেন – সেটের সমস্ত আসবাব তৈরি করলেন নানা ধরণের লালরঙে
============================================

সেই রাঙাঘর, সেই ক্যামেরা ততদিনে মাকে দিয়েছে এক সৃষ্টিজীবন, আর সে। জোজিমা। তার সহচরী। সহকর্মী। সহকারী।
ততদিনে সে উনিশে পড়েছে। সে। জোজিমা। তার হাতে ফিল্মের কেমিকালের গন্ধ। ইথারের ঘ্রাণ। এ-জি-বি-আর। সিলভার ব্রোমাইড। রূপালি তার হাতের পুতুল। নীল তার চোখ। নীল ব্লাউজ। ছোট্ট হাঁ-মুখ। স্নান করার আগে আয়না দেখায় তার বৃন্তের রঙ ধরা-ক্রিমসন।
হ্যাঁ বাথরুমে ততদিনে আয়না এসেছে। কাট-কাচের আয়না। মেহিকো-সিটি থেকে। এসেছে মায়ের আলোকচিত্রের যাদুতেই। রোজগারে। আর সেই সময়েই একদিন বাজারের একপাশে জ্যঁ-ক্লদ বাবুলের দোকানে এ-জি-বি-আর কেনার সময়ে গারসিয়া দোকানে ঢোকে। ওকে দেখতে। ক্লদ বাবুল তাকে শুধায় – কি চাই ছোঁড়া? আর গারসিয়া তাকে দেখায়। সে। জোজিমা। গালে তার আপেল ফলে। জ্যঁ-ক্লদ তার বাইফোকাল দিয়ে দেখে আর মুচকি হাসে। বলে – বঁ!
আর বোঁ করে সে গারসিয়ার হাত ধরে তাকে কপট বকুনি দিতে তাকে টিনের দরজা ঠেলে নিয়ে যায় দুর্গাবাড়ির ভেতর। দরজা ভেজানো থাকে। সে তাকে মঞ্চের ওপর নিয়ে যায়। লাজুক চোখে চায় আরেক লাজুক চোখ। দরজার দিকে দু-একবার চেয়ে সে তাকে ঠিক কানের নিচে চুমু খায়। গারসিয়ার চশমা হয়েছে ততদিনে। গারসিয়া কতো লাজুক হয়েছে! আচমকা কানের নিচে চুমু পেয়ে তার কান গুটিয়ে যায়। জোজিমার হাত ধরে। নাকের কাছে আনে।

- তোমার হাতে ফসফরাসের গন্ধ!
- মোটেই না। রূপো।
- যাঃ! রুপোর গন্ধ হয় না । ফসফরাসে হয়। আলো জ্বলে।
- আমার হাতে আলো জ্বলে বুঝি ?
- জ্বলে না বুঝি! তাইতো অত ছবি ওঠে।
- সে তো মা তোলে। আমি কি তুলি ?
- আমি দেখেছি বসপোরাসের জলে তুমি একদিন হাত ধুচ্ছিলে আর জল জ্বলজ্বল করছিলো। মাছ আসছিলো সে জলের খোঁজে।
- যাঃ! মাছ আসছিলো! মাছ আসবে কেন ?
- ওগুলো সাগরের মাছ। ওরা ফসফরাস চেনে।
- তোমার খুব সাগর ভালোলাগে, না ?
- আমি পর্যটকদের পছন্দ করি। নাবিকদের গল্প পড়ি।
- নাবিকরা মাছ চেনে বুঝি?
- হ্যাঁ, মাছ সাগরের কথা বলে।
- আর সাগর বুঝি ফসফরাসের ?
- আর ফসফরাস আলোর...
- আলো রূপোর...
- আর রূপ? ... ক্যামেরার

=======================================

সিনেমা দেখা এক চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত। আর শেষপর্যন্ত আলোকচিত্রই সিনেমার প্রধান মৌল। আলোর মানের হেরফেরে, তার মুক্তি ও বন্দিত্বের নিজস্ব শর্তে, মানব-ইতিহাস ও মানবচেতনার ওপর তার আসা যাওয়ার ক্রিয়াকলাপকে কতোটা গভীরভাবে নজরবন্দি করা যাচ্ছে, চলচ্চিত্রের আসল সোনা সেখানে। প্লট-ফ্লট বাজে কথা। গল্প বলার ইতিহাস কি? ভয়ে আত্মরক্ষার্থে মানুষ গল্প বলে... রাতের পর রাত একটা খুনীকে বিরত করতে মানুষ গল্প বলে। কচুকাটা হবার ভয়ে হাজার রজনী কেটে যায়।

মনভাবনা গল্প বলে না। মানবচেতনা আলোয় রচিত। দেয়ালের ওপর একটার পর একটা প্লেনের মুহূর্তছায়া ফেলে যাওয়াই যুদ্ধ। আলোরশ্মির যাত্রা আর জায়গায় জায়গায় তার বায়ুছাপ গড়ে তোলাই গল্প। আর ক্যামেরাই সে কাহিনির একমাত্র লিখিয়ে ও শুনিয়ে।

আমাদের ছবি দেখা – সব পাস্তিশ...

===

অনুপ্রেরক

১। ফোর শর্ট স্টোরিস বাই ইঙ্গমার বেয়ারম্যান, ইঙ্গমার বেয়ারম্যান, ইংরেজি অনুঃ, মারিয়ন বয়ার্স, স্টকহোম-নিউ ইয়র্ক, ১৯৭৪।
২। অবজেক্টস অফ ডিসায়ার, ইন্টারভিউস উইথ ল্যুই ব্যুনিউয়েল, মারসিলিও প্রেস, নিউ ইয়র্ক, ১৯৮২।
৩। রাইনার ওয়ের্নার ফাসবিন্দার, দ্য মিউসিয়াম অফ মডার্ণ আর্ট, নিউ ইয়র্ক, ১৯৯৭।
৪। এভারলাস্টিং মোমেন্টস, এ ফিল্ম বাই জান ট্রোয়েল, ক্রাইটিরিয়ন কালেকশন,২০০৮।

Wednesday, March 13, 2013

Remix

রিমিক্স / নীলাব্জ চক্রবর্তী



পিক্সেল বাড়িয়ে কমিয়ে
এই যে
আঁকা হচ্ছে বাড়ি ফেরার লোকাস
পাশের সিট ফাঁকা থাকাই তো ভালো
ট্যাক্সিচালকের ভালো লাগুক না লাগুক
ওই গানটাই                          ঘুরেফিরে বাজলো
ধোঁয়া ওঠা রাস্তার ভেতর
পাওয়ার হাউস দেখতে পাওয়ার কথায়
ইন্টারঅ্যাকশন রেশিও-র প্রতিশব্দ
আমি আন্তঃসম্পর্ক গুণাঙ্ক লিখবো কি না
আর ওটা ব্রেসিং মেম্বার নয়
হেলানো বাতিদান ছিলো
পুরনো রাস্তায়
পাশের সিট ফাঁকা থাকাই তো ভালো
রুমাল ভাগ করার ফুটপাথে কীভাবে যেন
চিলেকোঠার দাস্তান
কবিতায় লিরিকের ছাপ লাগিয়ে দিয়েছে
আপনার স্মৃতির মধ্যে মধ্যে          কোনোভাবে
আমারও স্মৃতির একটা দুটো বৈধ টুকরোর দ্বিধা
আর
পাশের সিট ফাঁকা থাকাই তো ভালো...

Sunday, February 10, 2013

Four Seasons


Bitter man, bitter man
This is where we stop
Bitter man, the snow’ll wash you off

So the world’s moved on
And its fallacies dry
Oh what are you without them
An image forever wry

Bitter man, bitter man
Here will the feather drop
Bitter man, the snow’ll write you off
                                        
                                             (Vigo’s song *)
--
So this is the winter where Vigo went down
On his haunches
A still aroma of a repressed trigger is all that’s going to stay

White walls, a white street, white waters and a distant enamel ship
We claimed that we could talk, but no sounds came out
The glass rattled, whisky sloshed
A feather dropped and detonated
Smokes and mirrors

Wish you was here to witness my absence
From all those that mattered
Wish I were as well …

--
তোমার সহসা আর তোর পুনরায়
এই সব ভাল লাগা আছে
চাপ ধাতুর থেকে অভিকর্ষ সরিয়ে নেয়া
অনুনয় ইত্যাদি ছুটকো ছাটকা অবয়ব... সমস্ত...সব
গাছকে গাছ পেরিয়ে যাচ্ছে সময়
আর সময়কে পেরিয়ে যাওয়া দ্বিধা
এইসব আমার স্বতন্ত্রতা কী করে ছেড়ে ফেলি আত্মঋণ
অনুগত জটিলতাগুলো

ভাব আমাদেরও প্রাচ্য হৃদয়গুলি সুপাচ্য হবে
জেলির বয়ামে নুনজলে প্রতিষ্ঠা পাবে
হে কহানি আমার, হে প্রাজন্মিক মাথার বেদনা

(*ভিগো কে ?
ভিগো এক অন্তরায়, দৈত্যাকার বামন বিশেষ,
যার ছায়া পরিত্যক্ত গোধুলির ধারে পুলের তলায়
পড়ে থাকে
কায়া ঘোরে সুমাত্রা মাদ্রিদে লবণের ক্ষেতে
আর বরফের স্বপ্নে ক্রমশ মথিত হয়
এই সব শোক
আমাদের ছায়ায় বসে, বিকীরণ ঢেলে দেয়
প্রপাতে কন্দরে অধোঃ ও ঊর্দ্ধবোধে নিয়মানুমানে)


স্যুরিয়ালিটির সঙ্গে এ লেখার সম্পর্ক নেই । অধিবাস্তবফাস্তব আওড়ালে জিভ ছিঁড়ে নেব শালা, মাইরি বলছি ক্যাঁচাল করবেন না ।

যাই হোক

হে কহানি আমার, হে প্রাজন্মিক মাথার বেদনা
মাছের রেসিপির পাশে ওঁত পাতা বেড়ালের ডাক

প্রতীক প্রতীক শুধু, কাননে কুসুম-- তোমার কী
গোদা ভাষা নেই ?

ভাষা কী আঁধারের থাকে ? জাহাজ ডুবলে
অন্তরীপের গায়ে ঢেউ নেমে আসে
ছুটন্ত বঁটির সামনে ছাই মাখা কইমাছের যে ভাষা
কানকো থেকে আঙ্গুলের ডগে
ব্যাথা দিয়ে ব্যাথাকে ঢাকার প্রক্রিয়া
টনটনে মগজের পাশে বর্ণান্ধ বিস্ফোট জাগে

লিপিত হয়ে যাও তবে, থিওরেমা হয়ে
বর্ষার রিকশায় ওঠো
জিপসী মেয়েদের ফ্রকে, উল্কিসিক্ত বাহু বেয়ে
সাপের মণীষা হয়ে কাঁদো, কাতরাও
আর মাল খাও প্রচন্ড গভীর
আমাকে সাঁতলে নাও, তেলের কড়ায়
মৌরী ফোড়নে, আদা ও মরিচ বাটা
তারপর গুলাশে ডুবিয়ে নাও রুটি ও ব্যাঞ্জো
উৎসব হোক

তোমার সহসা আর তোর পুনরায়
এই সব ভাল লাগা আছে
আর আমিও তো তেমন নাগরিক নই
রমণকালে বালিশের পোজিশান নিয়ে খুব ওয়াকিবহাল
আঙুর বাগানের পাশে যারা থাকে
তারা আজো গান গায় কাঁকড়ার খোল চুষে খেতে খেতে
লেবু চিপে নেয় আঙ্গুলের ক্ষতে
এই মুহূর্তে যখন খুব ঘরবাড়ি নেই
গাড়ির হর্ণের পাশে গাড়ি নেই
উত্যক্ত পার্কিং লটে প্রিয়জনের কবর থেকে ফেরা
ডাউন ব্যাটারি
যেন জাহাজের খবর এল
আমাদের খোলের ভেতর নির্জনতা চারিয়ে এল
চিবুকবিন্দু নিয়ে ভ্রুক্ষেপগুলো
 বুকশেলফে জাল জমছে
বরফের বাড়িঘর নিয়ে জটিলতা
ক্ষত যাদের ভোগায় তারা ফিরিয়ে ফিরিয়ে আনে সময়
যেমন সত্তরের বেলবটমে একদিন শহর ভরে গেল
আমরা তাকিয়ে দেখলাম পথপোঁছ
ম্যায়নে পেয়ার কিয়া-টুপি
সামগানের তালে মার্চপাস্ট

আমাদের ছায়ারা আক্রমণ করবে আমাদের ছায়াদের
এই তো সত্য, শাস্তির প্রার্থনায় ঘন হয়ে উঠবে
আমাদের প্রতীক্ষা
ঠকঠকে আলোর দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে
খুব ভালো হয়ে উঠবে একটা সময়

Bitter man, bitter man
It’s a life not to be
Bitter man, we’ll sail off to the sea

So the world’s moved on
And its songs turned to dirt
Oh what are you without songs
Merely a withering gust

Bitter man, bitter man
Here the feather will drop
Bitter man, the wind will dust you off
                                     (Vigo’s song**)

So this is the summer where Vigo went down
On his haunches
A still aroma of lavender is all that’s going to stay

Green fumes emanating from meadows, a green balustrade
Mosses gather on marble tombstones
The glass rattles, whisky sloshes
Green detonates, it rains green…

It’s a life we all wanted
It’s a life we’re never going to live

Wish you was here to witness my absence
From all those that mattered
Wish I were as well …

তোমার সহসা আর তোর পুনরায়
এই সব ভাল লাগা আছে
ভাল লাগে প্রকৃতির কাছে এসে
মানুষের অন্ধ হয়ে যাওয়া
দূর যে কবে এক পাহাড় হয়ে এল
আমাদের কাছে তার অবসাদ জমা
মাছ ধরে ফেরার ক্লান্তি
অপেক্ষাকে গুটিয়ে ফেলার ক্লান্তি

(**ভিগো কে ?
ভিগো এক অন্তরাল, খর্বাকায় দানববিশেষ
বুচড়খানায় যার পুদিনাগন্ধী ছায়া
শুকরীর পেট চিরে বার করে আনে নাড়িভুড়ি
সারারাত সসেজ বানায়
কায়া ঘোরে বোর্ণিও ডাবলিনে কয়লাখামারে
মরুর স্বপ্নে ক্রমশ মথিত হয়
এই সব শোক
আমাদের আস্তিনে স্পৃহা ঢেলে দেয়
চোরাবালি ভরা এক বালুঘড়ি ধরে সময় মাপার)

এই তো আমগাছ আর ঐ তার সীমাবদ্ধতা
সীমাবদ্ধতার মধ্যে একটানা বেড়ালের স্তব্ধ ঘুরঘুর
ফলে দরজা লোপাট করে দিতে কতটুকু ব্যয় হয়
জানলা বাড়িয়ে বেড়ালের স্বপ্নকে ডাকি
পাখিদের ভয়ভাট্টা ডাকি
বাক্সবন্দী করে ফেলে রাখি ক্ষিধে
শূন্যেরো মাঝার
ও ঘরবাড়ি ভালা না আমার

এরপরও ঠোঁটের কাঠামো থেকে
হাসিদের চলে যেতে বল
দুহাতে বিষয় ধরে উপমাআশ্রিত
সীমার্পিত হয়ে যেতে প্রেরণা যোগাও
প্রেরণায় ভেতর আমগাছ ধরে
আর একটানা বেড়ালের স্তব্ধ ঘুরঘুর
তোমার সহসা আর তোর পুনরায়
ফিরে আসে

Bitter man, bitter man
The light’ll play its tricks
Bitter man, listen, how the shadow drips

So the world’s moved on
And all its cats gone mute
Bitter man, it’s time
You play your Hamlin flute

Bitter man, bitter man
Here will the killing stop
Bitter man, the smoke’ll cure you off

                                     (Vigo’s song***)


{Never needed a barometer to realize that
My job was a high pressure one
Always thought of growing lawns
Now I walk on a lawn of thoughts
Deep into my own disturbances
And disturbances are personal-- aren’t they
So is murder, so akin to a soliloquy lost amongst hue and cry
From a sepia photograph Faulkner said—“The past is never dead”
It’s perhaps as well that we still swear by “sweet Jesus” and not “sweet Adolf”
Inquisitions in any form notwithstanding}

Anyway,

So this is the fall where Vigo went down
On his haunches
A still aroma of fear is all that’s going to stay

Copper hued faces coming out of a sepia photo
Clanking memories and the copper voice
Of Faulkner uttering –“past is never dead”
A past dropped, a past detonated – copper shards everywhere

A past we longed to avoid
A past we never could breach

Wish you was here to witness my absence
From all those that mattered
Wish I were as well …


তোমার সহসা আর তোর পুনরায়
এই সব ভাল লাগা আছে
ভালো আছে সব সমবায়
তন্তু ও আসক্তির টান ও পোড়েনে
সম্পর্ক ঘটে আর বিকর্ষণের কথা রটে যায়
ভালো লাগে,
সম্পর্কের কাছে নীচু হয়ে আসা
বিক্রিয়াহীন এক ভোর চারটের কাছে
আমিও তো তেমন নাগরিক নই
ঘোলাটেপনার ব্যাপারে খুব ওয়াকিবহাল
মেচেতার দাগের ভেতর যে মাংস ঘুমায়
তার চাহিদা আমাকে সান্দ্র করে তোলেসমস্ত শীতলতার মধ্যেও
আমাদের অস্বীকারের রেঞ্জ পেরিয়ে
এত দূরে চলে গেছে সীমাবদ্ধতা
তাকে আর সীমানা বলতেও দ্বিধা হয়

তবে দ্বিধার মধ্যে ভাল থাকো
ভাল থাকো উৎকণ্ঠাপ্রবণ
হুজ্জুতি করুণা মীমাংসা নিয়ে
নিহিত শৃঙ্খলায় ভাল থাকো


(***ভিগো কে?
ভিগো এক অন্ধকার, নাস্তিক ঈশ্বর বিশেষ
কাচের খাঁচায় প্রতিচ্ছবির গায়ে
আঁচড়ের চিহ্ন না দেখে আস্বস্ত হয়
অথচ আমাজন ঘাটশিলা, সর্বত্র অভ্রের খনি
কোনঠাসা করে ফেলে তাকে, ঘিরে ধরে তার নিরাময়
এই সব শোক
আমাদের ইতিহাসে স্থিতি এনে দেয়
নিজেকে আকন্ঠ হারিয়ে
যে স্থিতির খোঁজ পাওয়া যায়)

এইখানে তুমি, আর ওইখানে, আমার তোমাকে মনে রাখা
সুরুয়ার গন্ধে মনে পড়ে তোমার দোটানা
তোমার গন্ধ মনে নেই

তবে কিছু স্মৃতিকে বাড়িয়ে দিতে বল
নিজেকে সেলাই করে নিতে নিতে
স্পর্শের শালীনতা নিয়ে কথা বল
বরফের জানলার ভেতর থেকে দেখা
এক ঋতু আগের মেপল-কে দেখতার ভাসমান পাতানেপথ্য হলুদ
কোথাও অর্থ নেই, কোথাও শব্দ নেই, আমাদের অভিধান নেই
অভিধানে রেফারেন্স থাকে-- শব্দ থাকে না ।


Bitter man, bitter man
This is a life that’s gone
Bitter man, not you, I was the cynical one

So the world’s moved on
And all its mud turned bricks
Bitter man, it’s time
We forge our bag-o-tricks

Bitter man, bitter man
Here will the remembrance stop
Bitter man, your memory’ll drop you off
                                  
                                          (Vigo’s song****)

So this is the spring where Vigo went down
On his haunches
A faint aroma of plastic alphabets is all that’s going to stay

A yellow bridge gulps a yellow cab under the yellow sun
I wished that I remain, but no figure came running out.
It’s not poetry-- people are saying—just plain meaningless junk
Come on, who’s this punk?

Words fall, words detonate
The glass shimmers, whisky sloshes

It’s a life we all loathed
But it’s a life I’ve got to live

Wish you was here to witness my absence
From all those that mattered
Wish I were as well …


তোমার সহসা আর তোর পুনরায়
এই সব ভাল লাগা আছে
কালো সুতোর খোঁজে অন্ধকার হাতড়ে বেড়ানো
ধাতুর ঝরণার নীচে
এমন আকীর্ণ থাকা যেন সূঁচ একটা ধারণা মাত্র
অন্ততঃ বিঁধে যাওয়ার পূর্ব মুহূর্তে

দক্ষতার ভেতর বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে যে ঘোড়াগুলো
শেষবার তাদের কেশরে হাত মুছে ফেলা
ব্যস্তভাবে শুভরাত্রি বলে মাদার গাছের নীচে ঠায় বসে থাকা
খুব জেগে থাকা
অকপট জেগে থাকা শূন্যেরো মাঝার
ও ঘরবাড়ি ভালা না আমার

(***ভিগো কে?
ভিগো এক বন্ধঘর, স্তব্ধতার স্পন্দন বিশেষ
অন্ধত্বের লোভে, কানা গলি ধরে
অনুসরণ করে নিজের ছায়াকে
নাইরোবি বার্লিনে ধুসর জামার ক্ষেতে
চোখ পুঁতে আসে
আর বরফ যুদ্ধের মহড়ায় বার বার গোহারাণ হারে

এই সব শোক
আমাদের কাঠের পায়ের গোডাউন জুড়ে
ঘুণ চাষ করে)