Thursday, March 8, 2012

বিশ্লেষণ থেকে যে তোমাকে ছাড়িয়ে আনে
আর মেলে দেয় অন্ধকারে
সমাধিক্ষেত্রে, লবিতে, রাস্তায়
নতুন এক বিপন্নতায়
সেও এক দ্বিধা

দ্বিধার পরত খুলে দেখ
তুমি নেই

কেউ নেই
--
বিস্ময় যখন
ঘনীভূত হয়
আর নিঃশব্দে অনুসরণ করে
আমাদের সমস্যাদের
উৎকণ্ঠাদের
আর আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নকল
করতে করতে হেরে যায়

মৃদু শেকলের শব্দ ছাড়া
আর কিছুই কানে আসে না
স্থিতিও না
--
আলো ও অন্ধকার দু’ই ক্রিয়া
পদ্ধতি নিয়ে, সিদ্ধান্ত নিয়ে
কোন মাথাব্যাথাই যাদের নেই
শুধু পরস্পরকে
প্রতীত করে তোলা
আবছা করে তোলা
ছাড়া কোন কাজ নেই

দ্বিধা ও বিশ্বাস
নেপথ্য বানায়
নিজেরাই অভিনয় করে
রোল বিনিময় করে
কুকুর ও শেকলের

এই সব এক মাংসল পৃথিবীর কথা
সংশয় ও সঙ্ঘাত ছাড়া যার কোন অস্তিত্বই নেই
--
আলো নিভে গেলে
স্পর্শ সরল হয়ে ওঠে
মুহূর্ত থেকে মুহূর্তের মধ্যে
পায়চারি করে
না দেয়ালের কথা, না জানলার কথা
কোন কিছুই আর মনে পড়ে না

দ্বিধাই যখন একমাত্র ইন্দ্রিয়
কোন ঈশ্বরের কথাই মনে পড়ে না
--
এরপরও কতখানি উদাস থাকবো ঈশ্বর
কতবার প্রার্থনার ভেতর
প্রকৃতির ভেতর সুস্থ হয়ে উঠতে চাইবো
দেনাশোধের মত সরল রেখা হয়ে উঠবো

নিরিখের ভেতর চিহ্ন খুঁজে পাচ্ছি না আর
ঘটনার ভেতর নিজেকে

স্তরে স্তরে সূর্য উঠেছে
স্তরে স্তরে গরমের ছুটি
--

2 comments:

  1. সবকিছুই পার্থক্য। সুতরাং বদলাচ্ছে। বদলাতে হচ্ছে। আর বদলের একটা প্রাথমিক শর্ত যেন সংশয়। সংশয় আছে বলেই সংঘর্ষের অবস্থা তৈরি করে নেয়া। তা না থাকলে আত্মতৃপ্তি পেয়ে বসতো, নিজেকেই মনে হতো "অন্তিম"।

    অন্য প্রসঙ্গঃ
    'একটু হেঁটে আসো। লনে বসে কাজ করো। এক চেয়ারে বেশিক্ষণ বসে থাকলে ক্যান্সার হয়' - এরকম একটা কথা লেখা আছে আমার ল্যাবে। কথাটা যেন প্রকারান্তরে ওই সংঘাতের প্রয়োজনের কথাই বলছে। আমি যা ভাবছি নিজেকে, আমি যদি শুধু তার ভিতরেই থাকি, তাহলে কোনো সংঘাত নেই। সুতরাং আমি এমন সব অবস্থা তৈরি করবো যেখানে আমার বিপরীতমেরুর মানুষদের সাথেও আমার যোগসাযোশ তৈরি হবে -- মাংসল পৃথিবীর সংঘাত। কবিতার কথা বলছি না। এরকম ভেবে এসেছি। আর এরকম ভেবে এসে নানা ধরনের বিপাকেও পড়েছি প্রচুর। অবশ্য বিপাকের ভিতরেও মজা আছে।

    ----

    "দ্বিধা ও বিশ্বাস
    নেপথ্য বানায়
    নিজেরাই অভিনয় করে
    রোল বিনিময় করে
    কুকুর ও শেকলের"

    -- এই যে নিতান্ত এবস্ট্র্যাক্টট টার্মগুলোকে কর্তা বানিয়ে কথা বলা -- বাক্যের "উদ্দেশ্যপদটির" কাঠামোর বুঝটাকে চালনা করে দেয়া নিতান্ত কাঠামোহীন , আপাত-অসীম ধারণাগুলির দিকে...এই ব্যাপারটা দারুন - পাঠকের চিন্তাকে টেনে লম্বা করে ফেলতে চায়।

    * * * * *

    "দ্বিধা ও বিশ্বাস নেপথ্য বানায়" -- 'নেপথ্য' শব্দের ব্যবহার দারুন লাগলো।

    * * * * *

    বিশ্বাস জিনিসটা নিয়ে আমি অনেক ভেবেছি। নানা ধরনের বিশ্বাস আছে। যেমন -- কেউ একজন অতি খুতখুতে লোক জানতে পারলো, যে তার এক বন্ধুর ভাইরাস জ্বর হয়েছে দরজার নব ঘোরাতে গিয়ে।। তার পর থেকে সে যখনি কোনো দরজার নব ঘুরাতে যায়, খুত খুত করে -- তার বিশ্বাস তার ফুসফুস পাংচার হয়ে যাবে নব ছুঁলে!...

    কিন্তু বিশ্বাস ছাড়া আমরা অচল। কিছু না কিছুতে বিশ্বাস করতেই হবে যেন। যেমন - প্রগতিশীয়দের কথা যদি ধরা হয় - মানবতাবাদিতায় বিশ্বাস, যুক্তিতে বিশ্বাস, বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে বিশ্বাস, কল্যানে বিশ্বাস, মানবাধিকারে বিশ্বাস, 'ভালবাসায়' বিশ্বাস। ...এই সবই তো বিশ্বাস । ঠিক যেমন একটা পাথরকে দ্বিতীয় কোনো কিছুর রূপক ধরে নিয়ে তার অর্চণা করা বিশ্বাস।

    সুতরাং দেখা যাচ্ছে - বিশ্বাসের ভূত ছাড়া আমাদের ঘাড়গুলি একদম নাখোশ। এর কারণ কী ? কারণ কি এই না যে - বিশ্বাস মাত্রই আশা। এবং আশা একটা বিশাল ব্যাপার বেঁচে থাকার? কালেক্টিভ কিছু আশাই কি একটা একটা জনপদকে টিকিয়ে রাখছে না প্রকারান্তরে? ... একটা ঘোলাটে আশা -- কিসের যেন ! ... অর্থাৎ যেটা হচ্ছে - মানুষ ঠিক করে নিচ্ছে বিশ্বাসের কোন ভূতটা ঘাড়ে তুলে নেবে ... কেউ নিচ্ছে প্রথাময় ভূত , কেউ নিচ্ছে রেলেটিভলি কম প্রথাময় ভূত।

    -- এ হচ্ছে সাধারণ ফ্রেম। ... কিন্তু এই কবিতাটি এরকম সাধারণ ফ্রেমগুলি যাদের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠছে - সেই প্যারামিটারগুলিকে চ্যালেঞ্জ করছে। ফুসলাচ্ছে ... অনেক অনেক মোজা উলটে দিচ্ছে --

    প্যারাডক্স তৈরি হচ্ছে - যেমন - যে শেকলের শব্দ শুনতে পাচ্ছে - সে তো শেকল থেকে বেরিয়ে এসেছে নিজে - কিন্তু কই ? সে তো আসলে সেকলের ভিতরেই আছে। তাহলে শেকলের শব্দ সে শুনতে পাচ্ছে কী ভাবে ? সে কি একটা ক্র্যাক ?

    এরকম আরো আরো কথা মনে আসছে ... পোস্ট বেশি লম্বা হয়ে যাচ্ছে -

    ReplyDelete
  2. তোর পাঠ, লেখার প্রেরণা দেয় না, নতুন লেখার মেটিরিয়াল দেয় । পোস্ট লম্বা হোক না ! ক্ষতি নেই ।

    ReplyDelete