Monday, November 7, 2011

ব্লেডলিখিত সত্তাচিহ্ন

২৫

চকিত শরীর থেকে দূরে গিয়ে দেখো
শব্দগুলো জড়ো হয়ে আছে
খাতার পিছনে ভাঙা অভ্যেসের জড়তামাখা
ম্লান গাভী, কুয়াশার কাচ একটানা বয়সের দিকে চেয়ে
তোমারই বয়সী শব্দ নষ্ট কোষ
নগ্ন কলা পেরেকের ঝকঝকে বুননে
নির্মাণ হয়েছে পথ ঔজ্জ্বল্য উদাসে
অথচ সেইসব বইয়ের দোকানে দামি বই
না-ঘুম রাত পার করে অপেক্ষা করত
শহর ফাঁকা হয়ে কোনও হঠাৎ গানের রোববার
মেয়েরাও তো দাঁড়াতো বলো,
এখন ক্যালেন্ডারের পাতা দ্রুত পড়তে থাকে
এই পাতিলেবু বিকেলে, সময়টা ভোগ্য
তার অবিন্যাসে সঁপে দেওয়া
নিজের কীটনাশক স্নায়ুকে তুমি
কতটা দোষ দিতে পারো?

এখন কিসে বিশ্বাস করো?
রেকর্ড-প্লেয়ার-গ্রুভ বাবার দুপুর?
ছড়ানো বাড়িটা থেকে দূরে বসে
সতীনাথ মুখার্জি ভালো লাগে কেন?
কমে আসা স্পেস চিহ্ন, ঘন সন্নবাঁধা
ডাক্তারি রিপোর্ট ছাড়া না কাঁপা স্পন্দন নিয়ে
লেখা কোন দিকে চলেছে?

7 comments:

  1. অসরলরৈখিক বা নন-লিনিয়ার রচনার একটা পদ্ধতি হলো লেখা তার নিজের কথা বলে। তার নিজের গড়ে ওঠার কথা, বা তার নিজের যাবতীয় দ্বন্দ্বের, দুশ্চিন্তার (কনসার্ন) কথা। এটা শুভ্রর লেখায় ২০০৬ থেকে আসছে। আমি নিজেও অত্যন্ত প্রবলভাবে এই পদ্ধতির কবলে। যথেষ্ট কৌশলে এটা করা হলে আমার মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে এই টেকনিকটা হয় ছাড়া দরকার নয়তো এর মধ্যে একটা ব্যপক রদবদল আনা দরকার। কিন্তু অভ্যাসের দাস হয়ে যাবার ফলে ছাড়তে মুশকিল হয়। প্রচেষ্টা জারি থাক। অনেকে আমাকে বলেছেন যেটা আমাদের লেখার গুণ বা নিজস্বতা সেটা ছেড়ে দেব কেন ? উচিত কথা। কিন্তু "নিজস্বতা" খুব বেশিদিন "নিজস্ব" থাকে না। তাই তার নবীকরণ বা সংষ্কার প্রয়োজন। শুভ্র যে কোনো পরীক্ষা খুব যত্নে, সাবধানে অত্যন্ত কুশলিতার সাথে করে। ফলে ওর পরীক্ষাকে পরীক্ষা মনে হয় না। এখানেও তাই। তবু এ ব্যপারে একটু হুঁশ থাকা ভালো মনে করে এইসব বললাম।

    এখানে স্মৃতি এসে রচনা ও ভাবনা পদ্ধতির সাথে কখন জড়িয়ে গেলো, কখন তারা এক বৃন্তের বাসীন্দা হয়ে উঠলো আলগা পাঠে ধরা পড়ে না। সেটা এই অংশের প্রধান গুণ। লেখা ক্রমশ "groovy" হয়ে উঠেছে রেকর্ডের গ্রুভের মতো - রেকর্ডের ব্যবহারও একটা বিশেষ সময়কে দেখাচ্ছে। "সন্নবাঁধা" শব্দের ব্যাখ্যা চাই। "সন্না" বুঝি।

    অতীত ক্রমশ সঘন বলেই হয়তো রচনার স্পেসচিহ্ন কমে আসছে। অসুস্থ বাবার ডাক্তারি রিপোর্ট ও তাকে ঘেরা জায়মান অনিশ্চয়তাই যে আজ লেখার ধর্মজোব্বা হয়েছে এর সৌন্দর্য ও নান্দনিকতাকে কত স্বাভাবিক লাগে। বেশিরভাগ কবির হাতেই এসব ভাবনা কোষ্ঠকাঠিন্যে রূপান্তরিত হয়।

    ReplyDelete
  2. "Ghana SannaabaNdhaa"...aamaakeo bhaabaalo..."Ghana SannibishhTa" bole ekTaa kathaa hay...sat+nibishhTa. aar ekTaa kathaa mane parhlo, anek din aage
    "aaj mane hay ei niraalaay/ dure chaayaa felchhen satinath" erakam likhechhilaam (kaurab-110) aamaader baba-jeThaa-sejomama ei generation-er lokder kaachhe sabcheye surelaa o romantic kanTha bodhoy satinath babur-i chhilo.

    --- Nilabja

    ReplyDelete
  3. কবিতা দারুণ ও আলোচনা ঋদ্ধ করলো । কিন্তু শুভ্র আমি একটা ব্যাপারে সবার সাথে সহমত হতে পারছি না । "ব্লেডলিখিত সত্তাচিহ্ন" শিরোনাম হিসেবে খুব মেলোড্রামাটিক লাগছে । ব্লেড পকেটমারের আঙ্গুলে, ছিঁচকাঁদুনে আত্মহত্যাকারীর শিরায় আর ফ্যান্সি পুরুষের গালেই মানায় (আমি হপ্তায় একদিন দাড়ি কাটি ঃ-)) ।

    ReplyDelete
  4. সব্যর কথায় ভরসা পেয়ে বলি আমারও কিন্তু ওই নামে আপত্তি। কিন্তু এতটা লেখার পর শুভ্র কবিতার নাম পদবী এপিঠোপিঠ করতে রাজি হবে না বলে আর কিছু লিখিনি। "ব্লেডলিখির সত্তাচিহ্ন" কেমন যেন বিদেশী কবিতার অনুবাদের মতো। যেমন কেউ যদি "como agua para chocolat" এর বদলে লেখে "নীরসম চকোলেট পরিবর্তক" - অনেকটা সেরকম লাগছে। আরো সাবলীল কোনো নাম খুঁজলে হয় না ?

    ReplyDelete
  5. লেখাগুলো ছাপা শুরু হয় ব্লেডলিখিত এইনামে। পরে আমি সত্তাচিহ্ন জুড়ে দিই। হ্যাঁ। মেলোড্রামা আছে হয়ত। কিন্তু তার পিছনে যুক্তিও আছে। পকেটমার ও "দাড়িকামুক" ছাড়াও আরেকজনের হাতে ব্লেডের ভূমিকা তুলনাহীন। প্রেমিকের হাত। তার অবদমিত যৌন কাতর চিহ্নগুলো সে লিখে রাখে গাছের গায়ে, যোগ চিহ্নে! রাজু+টুয়া। আসলে তো সে তার অস্বস্তিগুলোই লেখে। লেখে তার সত্তার অস্থিরতা। তা সে যতই প্রগলভ হোক। এই ঘটনা মেলোড্রামা বহন করলেও তার অস্তিত্ব অস্বীকার করা যায়না। নামের সহজ গমন নেই। অনুবাদের মত। অস্বীকার করা যাবেনা। তার কারণও এক অস্বস্তি! আমি যেহেতু অস্বীকার করতে চাইছিনা। লুকোচ্ছিনা তাকে তাই সে ওভাবে আছে। সত্তার অস্বস্তি।

    ReplyDelete
  6. ক্যাপ্টেন, আমি সচেতন লেখাকে লেখার মধ্যে নিয়ে আসা নিয়ে। চিন্তা করোনা। দেখো কত কমে গেছে এখন এই প্রবণতা। আর হ্যাঁ, কথাটা আমার লেখার ভুল। ওটা সন্নিবাঁধা হবে। সন্নিবদ্ধ কে দিশি করে দিয়েছি।

    ReplyDelete
  7. শুভ্র খুব ভাল লাগল, আরও ভাল লাগল সবার ঋদ্ধ আলোচনা... এখানে এটাই উপরি পাওনা। নাম নিয়ে শুভ্র র বিশ্লেষণ awesome... এখানেই নিজস্বতা....

    ReplyDelete