Sunday, November 20, 2011

কবিতা

রেখো মা দাশে’রে মনে
সান্যালেও কিছু মনে রেখো
ঠাসবুনোটের দেশে ঘোড়ারুগী
আলগাচরিত এক ফেঁসো
।।.....................।।


সর্বনাম ব্যবহারে উদ্দেশ আসে, উদ্দিষ্টের সাথে কথা । বারতা । আর ডায়ালগ কবিতার পরিপন্থী – এই ধরণের কথা হয়, হয়েছিল একদা আশিতে । বারোটা বাজে আর আমি তুই বলি, তুমি বলি, ব্যবহার করব না করব না করেও আপনিতে পৌঁছে একটু হাঁপিয়ে জল খাই, ইতস্তত করি, প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে হাল্কা চুলকে নিই ক্রিয়াপদে ঘুঙ্গুর বাজে । বন্ধুরা অনেকে সোজা কবিতা লেখার কথা বলেছিল – সৌমেন, রেণুপদ – আমি কঠিন কবিতা কাকে বলে বুঝি না ওরা সেটা সোজা করে বোঝাতে পারেনি—বেশি নয়, ৩-৪ বছরে টোটাল ঘন্টা দশেক এইসব নিয়ে কথা হয়েছে , এরি মাঝে সিমলিপালে বরফ পড়লো, জাপানে ভূমিকম্প আর নবাবগঞ্জে সেলিম আলির মূর্তি হল – পাখিরা মূর্তি নিয়ে যে কোন বাছবিচার করবে না সেটা জানলেও আশা ছিল, হাজার হোক পক্ষীবিদ তো —
পাখি বলতেই মনে পড়ল—ভাবপ্রবণতা, রবিন রঙের অস্বীকার
অ্যান্ড ডিনায়াল লিডস টু ডিপ্রেশান

অবসাদ

অবসাদ একটি জাঢ্য
অবস্থা
আর গতিহীন কোন কিছুই
প্রতারিত হতে জানে না
এমন কী তা স্বাস্থ্যকর হলেও

হাল্কা হেমন্ত নামে
শীতলতাকে চামড়া পরাতে পরাতে
ভাবি
বাতাসে যে আবেশ থাকবে এ’কথা কেউ কেন জানায়নি
আবেশ যে বাতাস মাত্র এ যদিও জানা ছিল
হাওয়ার আঙ্গিক নিয়ে মাথাব্যথাই
আমাদের খোঁড়া করে তুলল


তার পর অবয়ব তৈরী হয়
অবসাদের
আর অবসাদ এমন অবস্থাপন্ন
জাঢ্যের কারণে
প্রভাবিত হতে ভুলে যায়
ভয় পেতে ভুলে যায় ।

টনটন ফসলে ঢেকে যায় নৌকো
ডুবে যায় আত্মনিগ্রহে
-----------------

আর্যনীলদা, উৎসাহ পেলাম প্রচুর । ক্যানাপে -- একটি স্ন্যাক্স -- ক্র্যাকার বা টোস্ট-এর ওপর ক্যাভিয়ার, চীজ এই সব দিয়ে তৈরী করা-- পারী'তে অ্যাপিটাইজার হিসেবে খুব ব্যবহ্রিত হয় । ইন ফ্যাক্ট গোটা ফরাসী দেশে । ওয়াইন খাওয়ার জন্য খুব ভাল ।
নীলাব্জ তাহলে তৈরী হচ্ছি তোমার পারী যাত্রার । সঞ্চিতা, অকুন্ঠ কৃতজ্ঞতা । শুভ্র, কবিতার শিরোনাম নিয়ে তোর সতেজ, দৃপ্ত উত্তর তোর জাত চেনায় -- তুই পেরিয়ে যাবি সব্বাইকে এই ভবিষ্যবাণী করলাম । রুণা, তুই ছেড়ে আপনি ধরিলেন ! ই-কী ! ডিমোশান করেন ক্যান ?

Tuesday, November 15, 2011

এস হে

এস হে
লাবণ্য চেনানো পেরেক
ঘাস ফুলের মত ব্রেক
যে দৃশ্য আমাকে দেখেনি
তার ছায়া ঝুলে আছে
পেড়ে নাও
ছবি করে নাও
ভৌত উটের পাশে
কাঠচাঁপা গাছখানি নিভৃতি পাক

--
এই গান, মহাশূন্যের ওপার থেকে, এই সব ইন্দ্রানুগত ভেসে আসে ধরা ও ধরণী ত্বরা ও তরণী প্রাক মার্কনী –র‍্যাঁবো, রবি, বারীন – মাতাল, সোনা, হাশিস । নেশা যখন ইন্দ্রিয় পেরিয়ে যায় – বরিশাল থেকে আমিনাবাদ অব্দি হলুদ জলে ওঠে প্রবাহ – যে হলুদ নির্বানের নয়, গর্ভাবস্থা নয়, সুবর্ণাভ গতিচিহ্ন নয় – এক ফেলে আসা ডিকশানের ঘোর ও তার ব্রীড়া ... স্পষ্টত । ট্রামলাইন আমাদের সাবালক হতে দিল না । সমস্ত এসো হে, সমস্ত চিল বরাবর ।
--
অতিক্রম একটি অভ্যাস মাত্র – এই ভাবে ভাবতে পারলে সোজা হয়ে আসে দিনকাল । না বুঝেই নিজেকে পেরিয়ে গিয়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে দেখা যায় – কী ভাবে ঈষৎ ঝুঁকে এগিয়ে আসছি, থেমে অগ্রাহ্য করছি, খিস্তি করছি, ভুলে যেতে চাইছি অতিক্রান্ত রাস্তা ... অধিকন্তু ... সময় পেরিয়ে যাচ্ছে ... আর একটি বৈশাখের জন্য দাবদাহের জন্য গলে যাচ্ছে বিচি ... আহবানকারী গান হয়ে উঠছে ... জন্মাতে ভুলে যাচ্ছি, মরতে ভুলে যাচ্ছি ... গাঢ় মৃন্ময় হয়ে যাচ্ছি ... বৃষ্টি ফিরে যাচ্ছে ... না ভিজিয়ে, না ভিজে ।

Monday, November 7, 2011

ব্লেডলিখিত সত্তাচিহ্ন

২৫

চকিত শরীর থেকে দূরে গিয়ে দেখো
শব্দগুলো জড়ো হয়ে আছে
খাতার পিছনে ভাঙা অভ্যেসের জড়তামাখা
ম্লান গাভী, কুয়াশার কাচ একটানা বয়সের দিকে চেয়ে
তোমারই বয়সী শব্দ নষ্ট কোষ
নগ্ন কলা পেরেকের ঝকঝকে বুননে
নির্মাণ হয়েছে পথ ঔজ্জ্বল্য উদাসে
অথচ সেইসব বইয়ের দোকানে দামি বই
না-ঘুম রাত পার করে অপেক্ষা করত
শহর ফাঁকা হয়ে কোনও হঠাৎ গানের রোববার
মেয়েরাও তো দাঁড়াতো বলো,
এখন ক্যালেন্ডারের পাতা দ্রুত পড়তে থাকে
এই পাতিলেবু বিকেলে, সময়টা ভোগ্য
তার অবিন্যাসে সঁপে দেওয়া
নিজের কীটনাশক স্নায়ুকে তুমি
কতটা দোষ দিতে পারো?

এখন কিসে বিশ্বাস করো?
রেকর্ড-প্লেয়ার-গ্রুভ বাবার দুপুর?
ছড়ানো বাড়িটা থেকে দূরে বসে
সতীনাথ মুখার্জি ভালো লাগে কেন?
কমে আসা স্পেস চিহ্ন, ঘন সন্নবাঁধা
ডাক্তারি রিপোর্ট ছাড়া না কাঁপা স্পন্দন নিয়ে
লেখা কোন দিকে চলেছে?

Sunday, November 6, 2011

ব্লেডলিখিত সত্তাচিহ্ন

শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়


১৭

নিশপিশ করে ওঠে বন্ধুত্ব ভাঙা কাচ
স্তব্ধ মিনারের দিকে সহজ ঔজ্জ্বল্য
আমরা ভেদ করতে পারিনা
অনচ্ছ হলুদ আভা ছন্দ ঠিকরে
ধেবড়ে গেছে ভাষার দেয়ালে –
অথচ কত সহজে লিখে ফেলা যেত
কেমিস্ট্রি বইয়ের ফাঁকে লাল পাতা
শুকনো ঝরা ব্লেড
সম্ভাবনাময় শিরা
আমিতো এড়িয়ে গেছি, বলো,
কতদিন তোমাদের সঙ্গে নিশ্চিন্তে বসে
বারান্দায় পরিব্যাপ্ত কফি
মাথা নামিয়ে বসে থাকা পার্কে কোথায় যায়?
এইসব সরু লাইন নিভৃত কুকুর হয়ে
নীলিমা ঔদাস্যে কাকে চায়?
এই দীর্ঘ দুপুর, ভিজে বালিতে গা ডুবিয়ে থাকা?

১৮


অথচ যেটা চেয়েছি সেটা পাথরের উপরে
ধাপ ভেঙে উঠে গেলে
শ্যাওলা ও জল ভাঙা নৈঃশব্দ্যে
পৃথিবীর স্পর্শের বাইরে
তবু আমাদের হাতে একটা বই
এই জায়গাটার কোনও ইতিহাস নেই গাছ ছাড়া
পুরনো বলতে কোনও দিগ্বিজয়ী রাজা
বা তার পুরনো সংগ্রহশালার সামনে বসে
শিহরন? অবশিষ্ট নেই
চোখেমুখে জল ঝাপটা
কুয়াশার ব্লেডরংবিলাসী জল

২০

অথচ লেখাগুলোর নরম হওয়ার কথা ছিলনা
এই সময়ের রোদ সে তো টানটান প্রতিশ্রুতি
– ছাদে লেপ উত্তাপে দিচ্ছে মা –
ডিসেম্বর তো জড়ানো থাকে মজ্জার স্টিলে
অনুতরঙ্গের সবুজ সময় উচ্ছ্বাসে
তারপর কী? মরুটিলার ওপর
আক্রমণ করে বেঁটে স্পোর্টসকারের ঝাঁক?
কাঁকড়া বিছে ডুবে যায় বালিতে?
বালি তো শরীর, জেদি লাল পাথর কতদিন
জাগিয়ে রাখে প্রতিরোধ?
পাখির শিকারি ঠোঁট থেকে ঠিকরে পড়ে মাংস
থ্যাঁতলানো লেখা, ম্লান রক্তিম

মুখ ঘুরিয়ে নেবে বলো, ঠিক যেভাবে
বৃদ্ধ মানুষের বিকেলের পার্কে বসে থাকা?


২১

দৌড়চ্ছি ইঁটের গলি
লাল গতিহীন প্রস্তরতা একটু পরে মিশে যাবে
স্থির বৃষ্টি থেমে থাকা পানা থকথক পুকুর
হাত ডুবিয়ে লেগে গেছে সবুজ চূর্ণ অথচ
কলেজ যাওয়া আটকে নেই
পূর্ণিমার আঁশ ও একটু শহরে গিটার নিয়ে
প্রতিভাবান মঞ্চে আলোকিত
আমরা অকস্মাত ঢুকে গেছি সেদিন চৈত্রমাস
দূরে তেপান্তর গানটাই কি নচিকেতা?
ফিরে এলে মিথ্যা ও অসীমের মাঝে আর্তনাদের
রেশের মত জেগে আছে পাড়াটা
তখনও কাঁপছে চামড়া, নির্গত শব্দগুচ্ছ
ফিরবেনা জেনে নির্মিত হয়েছে
একটা পার্ক, কেন্দ্রে






২২

এভাবে নিজেদের কী ফিসফিস করি?
শাসকদল নিস্পৃহ মৃতদেহ ফেলে গেলে
শহুরে বন্ধুরা বিশ্বাস করেনা?
জমাট হাওয়ার পাশে শীতল তো আমি চাইনি
শুধু হাড় আঙুলে নিজস্ব বাঁক নিলে
হাত নিজে থেকে কিছু আঁকড়াতে চায়...
সামনে প্রস্তর নির্মাণে একটানা ক্ষয়

বুকের ভিতরে শুকনো রাস্তা আঁচড়ে
কুকুরদিন কী পায়?






২৩

সেই প্রস্তরতা খুঁজি এখন কোথাও
শীতের গায়ে জমাট পালকের স্তূপ হয়ে আছে
দূরের শহর... হয়ত শব্দটাকেই প্রিয় ঋতু মনে হয়
প্রিয়তা কোথায় যায়? এখন এই অক্টোবরে
ভেসে যাওয়া দেশে পুরনো গান শুনে
কেই বা রোদ্দুর?



২৪

তবুও সেইসব রাস্তাগুলো সহজে ভেঙে দিতে পারোনা
পাশ কাটানো নোংরায় দাঁড়াতে বলিনা, সামঞ্জস্যপূর্ণ,
যখনকার যেমন, পার্কে পেশাদার মালির মধ্যেই তো ছায়া!
ঢুকে যাও, প্যাকেটের মশলা কৌটয় স্বাভাবিক।
এইসব আয়নায় পারদ ওঠেনা
কেউ কি বলল?
অথচ পাথর ছিল
সমুদ্রের নুন লেগে পিছল মাতৃভাষা
একবারই মুখ থুবড়ে রক্ত শ্যাওলা মাখামাখি
উঠে এসেছিলে ঘরে, পতনকালে কি
আঁকড়ানো পাথরটা ছেড়ে দিতে পারতে?
শিথিলতা ঘষটে সহজেই এসে যেত
শ্রুতি-দর্শ-স্পর্শহীনতা
কে ছিল তখন?
আঁচড় ছাড়া রাতই কি প্রস্তরতা?
ঠিক কি কারণে ফিরেছিলে?
এই বালি ধর্ম ব্লেডের ওপরে
অতিদ্রুত চলে যাওয়া শোণিত ধারালো সাপ
কেন চেনোনা?

আজেবাজে কিছু মস্কো-রা

(বেশ কিছুদিন লিখি না-- হাতে মর্চে, ভাবনার জন্য সময়ও পাচ্ছি না -- তবু লিখতে ইচ্ছে করল -- আর্যনীলদা পারী থেকে ঘুরে এল -- আমার কাছে এই এক শহর -- একমাত্র শহর যেখানে আমরা দুজনেই ঘুরেছি ট্যুরিস্ট হিসেবে । আমি বউ বাচ্চা সমেত, আর্যনীলদা স্বাধীনতা সমেত)

দৃশ্য ভাবায় না
যেখানে ভাব ছিল না
সেখানে দাঁড়ালাম দেখলাম
দৃশ্য একটা স্টীয়ারিং মাত্র
ফলে সব এলোমেলো লাগে
দেখি
বার্তা ঘাড় থেকে ঝেড়ে হেঁটে যাচ্ছে কথা

১০ বছর আগেকার পারীকে
ভাবতে ভাবতে আর্যনীলকে জিগ্যেস করি
নোতরদামের ঝোপের চড়াইগুলো কী এখনো
উড়ছে
জর্জ ক্লুনির মত দেখতে গৃহহীন
কী এখনো তাদের খাইয়ে দেয়
আইফেল টাওয়ারের পূবদিকের বাড়িগুলোর
বারান্দায় ঝুলন্ত টব থেকে লতা
আর দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময়কার
জলীয় ওয়াইনে দারচিনি দিয়ে ফুটিয়ে নেবার অভ্যাস

পারীতে তখন বেশ গরম ছিল
সীজনেও
চলাচল বেশী ছিল
সময় যেভাবে সময়কে অতিক্রম করে
অবস্থান যে ভাবে নিরুপায়
ঘাড় গুঁজে থাকে
সেভাবে কাফে ভরে ছিল ক্যানাপে
মমার্তের ক্যারুসেল বন্ধ ছিল
ক্যামেরুণী ছোকরারা সুতোর তাবিজ বাঁধছিল
ভার্সাইয়ের ট্রেনে কাক ভিড় করেছিল
আমাদের চলাচল পাক্কা ট্যুরিস্টের মত ছিল
নীল মোরামের ওপর ঘুড়ির মুখোশ পড়ে ছিল
ঘুড়ি উড়ছিল

পায়রাদের সাথে পাল্লা দিয়ে
ছোটা ইমামবাড়ার উল্টোদিকের
সূর্যাস্তকে ডিসটর্ট করে
ঘুড়িটি সত্য
আমি সত্যের কাছে দাঁড়িয়ে ভাবছিলাম
উড়ে যাওয়া—শুধু এক জরুরী অবস্থা
সাতাত্তুরে মানুষেরা জানে
ব্যবস্থা ছাড়া কোন অবস্থাই
সত্য নয়
সময়, অবস্থান
ঘুড়ি
কথা

পারীতে লেখা কবিতা - মপার্নাস

আচমকা টান পড়েছিলো জলমগ্ন ছিপে
আর কোথাকার মাছ এখন কোথায়
জীবনের কোথায় কি ঘটেছিলো সব তো জানা যায় না
শুধু বয়সকালের বুরুশটান এক সেজানের কথা বলছে
যার মিহির প্রয়োজন এখন কম সময় কম
সঠিক রঙ অভিব্যক্তি পরিমিতি চায় মোটা ঘষাটান
রঙ্গঝর্নার অনর্গল এক কুলকুচি ভূদৃশ্যের পেছন যে মা প্রকৃতি
তার বেয়াদপ রঙ্গিন ছেলে

অনুশাসন তবু থেকে যাচ্ছে
পরাজয়
টেকনিক ছেড়ে দিলে কি থাকে ছায়াবাদীদের বুর্জোয়া ছবিতে
একমাত্র গিয়ামোঁ ছাড়া
প্রজন্মের পর প্রজন্ম অধিবাস্তব কবিতা
ব্যকরণ ভাষা নিয়ে কিছুই করেনি
মাইল মাইল খুঁজে রু কাম্পেন-প্রেমিয়েরের মুখে আমি
যে রাস্তায় ৫২ বছর আগে মিশেল পোয়াকার তার শেষ ছুট
গুলি খাওয়া শেষ রীল
তাবৎ পরীক্ষার পরেও নবতরঙ্গ গোদার একটা গোদা গল্প বলে
নিয়মভাঙার নিরাপদ আস্তানা অপরাধপ্রবণতা
রুদ্ধশ্বাস থ্রিলার
বিধি আছে থাকবে
আমার গণিত তার অভিকর্ষ খুঁজে পাবে
পায়