Sunday, June 28, 2015

অপ্রাকৃত সাহচর্যে

সোমনাথ সেন

গাছ থেকে নেমে আসছে অপ্রাপ্তমনস্ক ছায়া
ভঙ্গুর মৌচাক ভেঙে শীতলতা শুধুই উচ্চতর অবস্থানের
আবশ্যিকতা নয়
এই সহন ও শব্দের পাশে জড়িয়ে পড়া সাহচর্যে
জেগে ওঠে ঘুমন্ত  স্বর্ণভার   
চূড়ার উচ্চতম কৌলীন্যে
দেখি এক অপ্রতিম প্লাবনের ভেতর বেরিয়ে আসছে রাজপুরুষ
যেখানে চাঁদ ঠেকে যায়
দেবতার বিস্তৃতি ঠেকিয়ে দূরবর্তী ছন্দের দিকে প্রবাহিত তরল
প্রবৃত্তির বাইরে গিয়ে দাঁড়ায়

নিহত বৃত্তের লোভ ভেসে আসে বালিপাথরের দিকে
যতটুকু প্রজ্বলনের সম্ভাবনা অভিপ্রেত থাকে
বারুদের ও চামড়ার গাড়ত্বে
বুঝে যাই পৃথিবীর চরিত্রে কোনো
উচ্চতা নেই পোষ মেনে নেওয়া একটা বাড়ির দরজা পর্যন্ত
অরৈখিক থেকে যায় সালোক বৃত্তের নিচে


শূন্যের নিচে নেমে দেখি শূন্যতা আসলে উষ্ণতম দিনের মতই
নির্মাণের সহনশীলতা
হালকা আঘাত ভেঙে যে বিচরণ
রক্ষণ ও প্রাধান্য পায় নিহিত আড়াল গড়ে
স্পর্শের মোহ থেকে এভাবেই
তড়িৎস্পৃষ্ঠ গাছের প্রসঙ্গ আসে
বাকি যুদ্ধজয়ের উন্মুক্ত প্রকরণ ব্রহ্মের স্থিরতা পায়

এখানে প্রভূত বর্ণমালা ভেঙে দাঁড়িয়ে পড়ছে স্বাচ্ছন্দ্য
যেটুকু সূচনা থেকে এই অল্পবিস্তর জঙ্গল
বয়ে আনছে বিনম্র বালি পাথরের দাগ
সেই সহাস্য স্ফীতিই ভাসছে নিপীড়নের শেষে
এখন প্রবাহে মিলিয়ে থাকা অবিচল ঘোর অভিসন্ধি জানায়
উগ্র মাংসের ওপর 
  

এই যে সতেজ চামড়ার ওপর মৃত্তিকা দাগ, সেই তো বাদামী নয়?
নিতান্তই লয় ও তৃষ্ণা ঘিরে নামছে হিংস্র আভাস
যেটুকু পেরেকের দাগ রজস্তুতি
মেরুকরণ ও মেদের সমাধি ঘিরে
প্রকাশ করছে কড়ি ও কাঠের দূরত্ব – সেই আবছা আলোয়
পতঙ্গের ডানা ভেসে ওঠে
দেখি, একটা পায়রার দেহ থেকে উগ্র মাংসের আমেজ
পেয়ালার মুখ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে থাকে

যদিও পার্থিব কিছুই আর বিপর্যয়ের দিকে নেই
পাত্রের কিনারে এই চলনের দাগ
সেই তো শুধু প্রচল বিবরণভেদী নয়
বাকি হিংস্রতা ছুঁয়েও দেখছে না আমাদের
এই সাহচর্যে আদিমতার ধারণা বিচ্ছিন্ন হতে থাকে


তরলের ঘনত্ব বাড়তে থাকে
ক্রমশ গড়াতে থাকা আবহের ওপর নিরপেক্ষ শঠতা
যে শুধুই প্রত্নতত্ত্বের অভিসন্ধি মেখে প্রাচীন হয়েছে গাছ
তা নয় – নিরপেক্ষ টান ও উচ্ছ্বাস
লালাগ্রন্থির আকস্মিকতায়
ছেড়ে যায় অরৈখিক স্বাদ কোরক

আমিও ব্যক্তিগত প্রাধান্য ছেড়ে এই ভূমিকা জুড়ে দিই
নাব্যতার ওপর –
দেখি এক অপ্রাকৃত প্রতুলতায় নেমে যাচ্ছিস তুই
নিদেনপক্ষে এক মৌন বুদবুদের দিকে
অথচ তোর নিবৃত থাকার প্রচেষ্টা
অক্ষমতার প্রসঙ্গে যুদ্ধ বিলাসী হয়
  

শুধু উপমাই আশ্রয় পেয়েছে এতদিন, আজ নিয়ন্ত্রণের বাইরে
দেখি বিলম্বিত আড়াল
কিভাবে একের পর এক অলৌকিক কীটনাশকের ওপর
জমাট বাঁধছে মৃত পাখনা ও দেহের সমারোহ

জটিল শিরার ওপর নেমে আসা ভোঁতা ব্লেড
সজীব দেহপসারীনির ভূমিকা ঘিরে ধরে
বাইরে থেকে যায় কিছু ঘনিষ্ঠ রাস্তাঘাট
এই উজ্জ্বলতা, নেমে আসা মুদ্রণ 
কতদূর যে যায় - গড়িয়ে পড়া লালার ওপর প্রলম্বিত ঘণ্টাধ্বনি  
পুনরায় উত্তপ্ত করছে পোশাক
যেখানে ভোঁতা রঙ
কায়িক শ্রম ও সাহচর্যের মধ্যবর্তী পারদ গন্ধ ছেড়ে
নিভন্ত দাঁড়িয়ে থাকে শ্যামল ছায়াটির নিচে


বাকি গভীরতাটুকু বিভাজনে অপ্রাকৃত দাগ কাটে
ক্লান্তির পূর্ববর্তী বাধা ও সম্ভাষণ ছাড়িয়ে
আপেলের খোসা নিয়ন্ত্রণ পায় অব্যবস্থার দিকে

সারা রাত ধরে ছড়িয়ে পড়ছে জুয়ার ব্যতিক্রম
আর কেউ নেই মাথা ও পেটের মধ্যবর্তী গভীরতায়
যেটুকু নাস্তিক বাস করে
দর্শনের খোঁড়া পাখি কোথায় যে যায়
গৃহবন্দী প্রেতের বিভিন্নতায় আর কিছুই উল্লেখযোগ্য থাকে না
এই অঙ্গহীনতা শেষ পর্যন্ত ওম থেকে বেরিয়ে আসা শ্বাপদ
হালকা হাতমোজার ওপর
মাতৃত্বে দাগ কাটে


আমাদের অনুচ্চারিত প্রতিবিম্বের দিকে সচল হয় দাহ
কয়েকটা স্থিতিশীল ছুঁয়ে থাকা
স্থির তড়িৎ এর আকস্মিকতায় গড়ে নেয় উদার প্রলোভন
কিছুটা ঘন নুনের ওপর কাচ
যেমন পুনরায় অস্বচ্ছ করে জলের বিস্তার
সেই নেমে আসা তরঙ্গের ওপর
তুরীয় চেতনার বয়ে চলে বৃহত্তর মানুষের ঘাম

  
সীমাবদ্ধ খোলস ও কঙ্কালের চরিত্রে
ঘুমের সত্যতা ছড়িয়ে পড়লে
সন্ত্রস্ত রাডার ভুলে থাকে বোধহীন বারুদের ঘ্রাণ
নিয়ন্ত্রণের বাইরেও 
যে শুধুই দেরাজের দিকে ভেসে যায় অন্তর্নিহিত পাখনা তা নয়
ডুবন্ত আঁশের সহায়তায়
মাছের সম্ভাবনা গলনাঙ্কে পৌঁছে যেতে থাকে
খেয়াল এক অবিচ্ছেদ্য
বেতার যন্ত্রের ভেতর হাত ঢুকিয়ে তুলে আনি
সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম
দেখি খুলে ফেলা অন্তর্বাসের চেয়ে সহজ
আত্মহত্যা আর কিছুই নেই


সহজাত গঠন ধীরে ধীরে কোষের সমারোহে
মুদ্রিত হতে থাকে রক্তাল্পতার ওপর
এই যে শুষ্ক সাঁতার শুধুই ফ্যাকাসে সম্ভাবনাকে প্রগাঢ় করে
তা নয়, নিয়ন্ত্রণের ওপর জমাট রেচন ও মৃত্যু গাড়ত্ব চায়  

দৈনন্দিন ব্যস্ততার বাইরে
যেটুকু রাত্রির উল্লাস বিনোদনের পরিসর থেকে
উজ্জ্বলতা দাবী করে
পর্দার অনুচ্চারিত তরঙ্গে ভেসে থাকে তোরণ
সেই গতিপথের প্রিয়তম রেখাটিই
ভোগহীন চেতনার পরিপন্থী হয়


১০
পরিসীমার ফ্যাকাসে কাটিয়ে বিন্দু বিন্দু সৌজন্যে 
ছড়িয়ে যাচ্ছে সুদীর্ঘ জলাজমি
কোথাও ব্যস্ততার লালা বিন্যাস
কোথাও আবার উন্মুক্ত হয়ে পড়া মড়কের ইঁদুর
শেষ পর্যন্ত গুমোট ও বর্জিত কণার দিকে স্থায়িত্ব পায়

স্থাপত্যের কিনারা ভেঙে
জটিল হচ্ছে উপস্থিতি যেটুকু অনুচ্চারিত তরঙ্গ
সংখ্যাহীন কারবালার দিকে ভেসেছে শাশ্বত অতীত
সেই কোটরের ভেতর থমকে থাকা গভীরতা
পুনরায় আশ্বস্ত হয়
শ্যাওলা পড়ার সম্ভাবনা পিচ্ছিল থাকে
উজ্জ্বল দেয়ালের দিকে
এই অসামঞ্জস্যে জড়িয়ে পড়া বেদনা
প্রতঙ্গপ্রমান মুগ্ধতা নিয়ে পরিশ্রমী হয়
শুষ্ক রেণুর ওপর


১১
পুনরায় নিঃশুল্ক থেকে যায় প্রতিবেদন
বৈধতা ছাড়িয়ে এই যে আবহ পুনরুৎপাদনের কোষ ভেঙে
গড়িয়ে পড়ছে কষের লালা
আলজিবের টুকরো আঘাত ছাড়া
আর কতদিন শব্দহীন থাকা যায়
কতদিন কমলালেবুর খোসা ছাড়িয়ে টেনে নেওয়া যায়
উপেক্ষিত বিকেল
নিতান্তই শুষ্ক থাকছি বলে
এখনো জটিল কারকের কাছে প্রতিহিংসা পরায়ণ
জল নেমে আসে
মৃদু দরজা বেয়ে


No comments:

Post a Comment