Thursday, November 13, 2014

বসন্তপর্যায় গেল আমাকে করলে না তুমি ভালো

বসন্তপর্যায় গেল আমাকে করলে না তুমি ভালো
আমি যন্ত্রণার ভিতরে সেঁধিয়ে যেতে যেতে বুঝতে পারছিবেঁচে আছি
আর হতাশার ভেতর সেঁধিয়ে যেতে যেতে বুঝতে পারছিবেড়ে উঠছি
কলমের রেখা ও ফলন দুই আমাকে
পেড়ে ফেলছে অংকে  করুণায়
শেষ পর্যন্ত
যা মিলল না তাই অংক আর
যা মিলে গেল সেই কবিতা

এ-সব তোমার কথা-- আমাকে শুনিও না

আমি বরং মদের গ্লাস ঠোঁটে
তুলে কফির প্রত্যাশা করি
মাথাব্যথায় আর সবুজ সংবেদ
লিখতে লিখতে ফিকে ও হলুদ হয়ে আসে
আমি রিয়েল এস্টেট আর ট্যাক্স সেভিংস
খুব জাহ্নবী জাহ্নবী ...
লিঙ্কন কবরে চামেলির রেণু
ওহো গোরস্থান মানে কী মানুষের পেচ্ছাপও পাবে না
সংবদ্ধ পাকুড় থেকে বসন্তপর্যায়
দেয়াল টপকে আমলা বনের
দিকে ফল শেষ আর
চাগিয়ে ওঠা ফাঁক ফোকর
নুনের খাড়ির পাশে বেঁটে মানুষের
সন্দর্ভ জোয়ান হয়ে এল
একটা কামিনী থেকে অনেকটা ঝরে
আলগা  পৃথিবী  আমাকে করলে নারে ভালো


 বসন্তপর্যায় গেল আমাকে করলে না তুমি ভালো
শীতের প্রাক্কালে ঘুঘু ডাকছিল টারটল ডাভ
ওদিকে কিছুটা তো
ফাঁদ ও ডেকেছিল
মাতমে কাতানে বেনারস থেকে আলগা ডেকেছিল
ঘুণ ও চলন আর মলিন মলম
আমি তো ইমোশানে  গুটিয়ে গেলাম
এমনকি শিশ্নসমেত    বাতাবরণে
ঘামে   মোটা হাওয়া বসল অকস্মাৎ
রূহ আর রূহ
আর মানে ঘিয়ের চাপাটি
কাঁচা অরহড় দাল রসুনে রসুনে
খিদে পায়  বাঞ্চোত  বসন্তবনে
ডাগর বসন্ত         আমি
শীর্ণতার ভেতর নামিয়ে দেখছি পা
গভীরতা কতটা ডিসেপ্টিভ
ভাবনার ইকোগুলি
ফিরে আসছে
দুপুর গড়িয়ে ক্ষীণ     বসন্তপর্যায়
সেও স্নান ফান সেরে  উঠে আসছে
ফাঁদ থেকে


 বসন্তপর্যায় গেল আমাকে করলে না তুমি ভালো
সিল্যুয়েট থেকে নেমে গেলে
কাঁড়ি কাঁড়ি ছায়াতে নেমে গেলে
মাচান থেকে ছিটকে পড়ল শসা
আর শসার ধারণা
সালাদ অয়েলে   লেবুর নির্যাসে
সেখানে মেধার জিভ ফুটে আছে
আর খুব অধরা বাজারে  কৃতি ও কার্পণ্য
ত্রাসে ত্রাসে জোকার হিলছে
ফণাখানা নিমজ্জ রেখে
আমাকে তো ঘুরে তুমি দেখলে না
আমার পিঠের দাগ তোমার সুমুখে তাই
চক্কর কাটল হে  কানপুরে দেবা শরীফের
কাঁচা রাস্তায়  কত  প্লব হয়ে উঠেছে প্রকৃতি
তরই ফুলের পাশে সারাটা ছায়ায় তুমি
বসিয়ে রাখলে বেখেয়াল
সিল্যুয়েট থেকে নেমে গেলে আমার
নির্যাস থেকে খুব নেমে গেলে...

10 comments:

  1. স্বদেশদা মারা যাবার পরপরই ফেসবুকে আমাদের এক পরিচিত কবি এই লাইনটা পোস্ট করে - বসন্তপর্যায় গেলো আমাকে করলে না তুমি'। 'ভালো' টা আমার ফোনপর্দায় কেটে গিয়েছিলো। এটা না-লিখে পারলাম না। ভেবেছিলাম, আহা! কি লাইন। সেক্সলেস শীত থেকে বসন্তও পারলেনা উদ্ধার দিতে!

    তারপর 'ভালো'টা দেখতে পেলাম। মানে বদলে গেলো। সিনেমার মন্তাজে যেমনটা হয়। একটা সামান্য ইমেজ যোগ করে গোটা মানেটা বদলে যায়।

    যাইহোক, এ কবিতা নিয়ে একটাও কথা বলার নেই। পরিপূর্ণ, perforated, ভরাট, পাথুরে, ঘন, চিন্তক, ফুলেল, উন্মুক্ত, খয়েরি, বিষাদী এক উদ্ঘাটন, উন্মোচন...এক বন্দীদশার।

    ReplyDelete
  2. ভরসা পেলাম আর্যনীলদা । আসলে আবার সময়াভাব শুরু হয়েছে । নিবিড় ভাবে ভাবার সময় হচ্ছে না । অভ্যাস বজায় রাখতেই খানিকটা প্রায় জোর করে লেখা চলছে। তবে স্বদেশদার লাইনটা সাঙ্ঘাতিক--যেটুকু হেল্প করার ওটাই করছে ।

    প্রথমবার ওই লাইনটা পড়ি সম্ববত ২০০৩-এ -- তখন কিতু বসন্ত বলতে ঋতুর কথা মাথায় আসে নি--পক্স এসেছিল ।

    ReplyDelete
  3. আমি একটু এক ফাঁকে ঢুকে পড়ি যদি কিছু মনে না করেন :)

    'সততা'-র চাইতে ভালো কোনো শব্দ আছে কিনা -এইটা ভাবি। সব্য - আপনার কবিতা ...

    একটা খুব উন্নাসিক সমালোচকের মত আপনার এই লেখাটা পড়া শুরু করি,থুতনিতে আঙ্গুল রেখে ... দেখি কী করেছে মানুষটা ... কবিতা তো জানি-ই ... এইরকম একটা ভাব

    যেইটা হলো, সততার পর্যায়ক্রমিক মিষ্টি মধুর আক্রমনে বিপর্যস্ত হয়ে গেলাম। আপনি অসত্‌ (ক্ষন্ডিয় ত আসছেনা) হতে জানেননা। -

    বিঊটিফুল!

    ReplyDelete
  4. আমি একটু এক ফাঁকে ঢুকে পড়ি যদি কিছু মনে না করেন :)

    'সততা'-র চাইতে ভালো কোনো শব্দ আছে কিনা -এইটা ভাবি। সব্য - আপনার কবিতা ...

    একটা খুব উন্নাসিক সমালোচকের মত আপনার এই লেখাটা পড়া শুরু করি,থুতনিতে আঙ্গুল রেখে ... দেখি কী করেছে মানুষটা ... কবিতা তো জানি-ই ... এইরকম একটা ভাব

    যেইটা হলো, সততার পর্যায়ক্রমিক মিষ্টি মধুর আক্রমনে বিপর্যস্ত হয়ে গেলাম। আপনি অসত্‌ (ক্ষন্ডিয় ত আসছেনা) হতে জানেননা। -

    বিঊটিফুল!

    ReplyDelete
  5. aro kichhu kotha likhechhilam - kintu net er biporjostotay hariye gyalo.

    ei kobita Ta niye specific kichhu kotha. kibhaabe akTa bhonggi, akTa image ke sorasori ullekh na koreo taar obhighaat fuTiye tola ....

    kintu pura lekhaTai hariye gyalo ...

    bhalo theken.

    ami bohudin por net e / kobitae ekTu uki marlam. 'kool' rakhte rakhte biporjosto ekTu bhablam 'Shyam' er dike takai.

    ReplyDelete
  6. রাদ, কবিতার কথা আপনি জানেন । সততার কথা আপনি জানেন । আমি জানি এই কবিতাগুলোতে আপনার ভাষা আমার মধ্যে খানিকটা হলেও চলে আসছে--"ভাল করলে না রে ভাই"...এই সব উচ্চারণে । সেদিন অস্তনির্জন দত্ত বলে এক কবি লখণোউ এসেছিল-- তার সাথে গিয়ে বসলাম রেসিডেন্সি-র ভেতরের কবরখানায়। ফ্রেডরিক লিঙ্কন ও তার ভাইপো এক লিঙ্কন-এর কবরের পাশে । ভদকা ছিল । কুবো পাখি, কামিনি গাছ ছুঁয়ে হাওয়া, আমলকি বন । আর আমি পড়ছিলাম ব্রথেল মালিকের কারপার্ক ।

    খুব মিস করি আপনাকে, অর্ঘ্যকে । ফিরে আসুন । আপনার শ্যামো কূল দু'ই আপাদমস্তক থাক ।

    ReplyDelete
  7. ঃ-)

    না না আমি কী আর জানি। অল্প জেনে নিজেকে খুব বড় বলে ভাবি ।

    আসলে ওই স্বভাব থেকে জাত ভাবনা বা রি-একশন গুলাকে শব্দ দেওয়ার চেষ্টা করি। এর বেশি কিছু না।

    এবার যেমন আপনার কবিতায় ওইটা পেলাম। যে বিষয় বা ভঙ্গিটার কথা বলছিলাম যে সরাসরি উল্লেখ না করেও প্রকাশিত হয়েছে - সেটা হলো শিশ্ন সংশ্লিষ্ট একটা অসফল ঘটনা। আর তার সমস্ত চরিত্র ওই কামিনী গাছ বলেন, কবরস্থান বলেন - এগুলাকে উল্লেখ করে গড়ে উঠেছে - এই ব্যাপারটাই অভিভূত করতে যথেষ্ট

    একটা "ঘটনা" না, ঘটনার "ধরণ"। একটা সুর (music), একটা Tone.

    এইখানেই নয়ুন ভাবে নির্মান করা। একটা অর্গানিক জীবন পয়দা করা।

    আর ব্যক্তিগতভাবে আমিঐখানে ধরা পড়ে গেছি ঃ

    "আমি বরং মদের গ্লাস ঠোঁটে
    তুলে কফির প্রত্যাশা করি"

    এইটা প্রথম "ধরা খাওয়া" - এর পরে পর্যায়ক্রমে আরও ... ঃ)

    ReplyDelete
  8. 'osofol' shobdoTa Thik holona. jak.

    ami ei "soor" bolte kee bojhacchhi - seTa aro kholasa korar jonno kichhu udahoron niye hajir hobo.

    Jani apni byasto - sutorang response korar jonno chintito hobenna please.

    ReplyDelete
  9. প্রথমে সূত্রঃ

    https://www.youtube.com/watch?v=NHp03UhbphQ

    এই ধরণের ওয়াজ মাহফিল ঢাকা শহরে না হলেও গ্রামে গঞ্জে খুব জনপ্রিয়।
    ঘুরে ফিরে একই সুর (মাখে মাঝে গান গেয়ে ওঠা। কিন্তু সুর ওই একটাই), আর গানের মাঝে মাঝে ব্রেক, পজ। কথা বলার ভঙ্গি ওই একটাই ...তো আমি ভাবলাম এইটা ভঙ্গিটা আমার এই লেখাটায় এসেছিল ঃ (অলরেডি আপনেদের পড়া)

    প্রজাপতি প্রজাপতি
    --------------

    তারা দুজনে একসাথে মারা যাবে তাই
    “প্রজাপতি প্রজাপতি কোথায় পেলে ভাই
    এমনও রঙ্গিন পাখা” – অবরোধে বাইক চালিয়ে আসা
    সমুন্নত সকালে সুলম্ব গাছেরা দুলল
    প্রেম হলো সুমসৃণ বাঁক প্রেম হলো মর্মন্তুদ
    ভীষণ সকালে দুটা প্রজাপতি
    লিফটের ভেতর আটকে গেল

    “আমি তারে পারিনা এড়াতে” – কোথা যাব কোন শরতে
    সন্ধ্যাগুলা বিশ্লিষ্ট হয়ে তারে তারে ঝুলছিল
    একটা মোলায়েম রেস্টুরেন্ট
    অনুন্নত বিশ্বের গায়ে অন্ধকার হয়ে ভাসছিল

    শহরে ভরা অবরোধ আর চোখেদের খুব গতি আছে
    তারা খুব দ্রুত চলে আসে কাছে প্রেম হলো
    মর্মন্তুদ প্রেম হলো সুমসৃন গাছ
    সুমসৃন সকালে “আমি তারে পারিনা এড়াতে”

    কিভাবে মারা পড়? কিভাবে মারা যাও?
    বৃত্ত নির্মান শেষে পুনরাবৃত্ত
    লিফটে আটকে থাকা প্রজাপতি
    বৃন্তচ্যুত


    <><><><><><><><><>

    এইটা হলো বাইরের সুর।

    ভিতরে আরেকটা সুর প্রবহমান থাকে।

    যেমন আপ্নের কবিতায়। শব্দে ষব্দে কিছু একটা নির্মানের দিকে যাচ্ছিল। আর তার একটা জৈবিক বাস্তবতা আছে।

    তবে সততা আমি আবার বলব।

    এই সততা কবিতা লিখতে উদবুদ্ধ করে।

    ReplyDelete
  10. রাদ, কৃতজ্ঞতা ছাড়া আর কিছু আসছে না । ঋদ্ধ হলাম আপনার আলোচনায় । আমার ব্যাকগ্রাউন্ড সূত্র কিছুটা আলাদা ছিল কিন্তু আপনার বিশ্লেষণ আরো চমৎকার । ফলে এটাই রেখে দিলাম-- আরো লিখতে হেল্প করবে আপনার আলোচনা । প্রজাপতি প্রজাপতি কবিতাটা কিন্তু পড়া ছিল না। অসম্ভব ভাল লাগল। নজরুল থেকে কিছু গড়ে তোলা তাও এক শিশুতোষ গান থেকে এই ভাবে অপার যাত্রা-- অভাবনীয়। আমি তো ভেবেছিলাম "সাঁঝের পাখিরা" থেকে কিছু জারমিনেট হতে পারে কিন্তু "প্রজাপতি প্রজাপতি" থেকে... সত্যি অভাবনীয় । এটা আপনার ভাবনার বাইরে আমার নিজস্ব এপ্রিসিয়েশান । আপনার বক্তব্যটা বুঝতে পারছি । ফিরে আসুন রাদ কবিতায় আর আপনার কবিতা পড়ান।

    ReplyDelete