তদোগেন গিরতের কবিতা-৪০
তুমি যাকে আলো বলে ভাব
আর সে যাকে আলো বলে দেখে
তার মাঝে প্রহর কে প্রহর বোবা দূরত্ব
সে’ই ব্যবধানকেই আমি আলো বলে জানি
আর সে যাকে আলো বলে দেখে
তার মাঝে প্রহর কে প্রহর বোবা দূরত্ব
সে’ই ব্যবধানকেই আমি আলো বলে জানি
তুমি আমায় অসাড়ত্বের মধ্যে বসিয়ে রাখ
আর অনুভূতির কথা শোনাও
আমার খরখরে ঠোঁটে সিগারেট গুঁজে দিতে দিতে
আত্মস্থ হও আর আমার ক্ষিদে-তেষ্টা ভুলিয়ে দাও
আর অনুভূতির কথা শোনাও
আমার খরখরে ঠোঁটে সিগারেট গুঁজে দিতে দিতে
আত্মস্থ হও আর আমার ক্ষিদে-তেষ্টা ভুলিয়ে দাও
আমি জানি পাঁচমিনিট পরে লোহার ড্রয়ার
খুলে তুমি আবার বেরিয়ে আসবে
পায়ের বুড়ো আঙ্গুল থেকে টিকিট খুলে
বাড়িয়ে দেবে কন্ডাকটারের দিকে
খুলে তুমি আবার বেরিয়ে আসবে
পায়ের বুড়ো আঙ্গুল থেকে টিকিট খুলে
বাড়িয়ে দেবে কন্ডাকটারের দিকে
একবগগা টানেল দিয়ে এই আমাদের গাড়ি
রীয়ারভিউ-এ খামারবাড়ির, কবরখানার আলো
রীয়ারভিউ-এ খামারবাড়ির, কবরখানার আলো
তদোগেন গিরতের কবিতা-৪১
অবশেষে পুরোনো ক্ষত মুখ খুলছে
শ্বাস নিচ্ছে আর কথা বলে উঠছে
নতুন ক্ষতর সাথে আর অবশেষে
রিপুর মত, অনুযোগের মত
বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠছ তুমি
শ্বাস নিচ্ছে আর কথা বলে উঠছে
নতুন ক্ষতর সাথে আর অবশেষে
রিপুর মত, অনুযোগের মত
বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠছ তুমি
অবশেষে তারে টাঙ্গানো সাদা
কাপড়েরা
রঙ্গীন হয়ে উঠছে বাতাসে
আর ইঙ্গিতের ভেতর গুটিসুটি মেরে
ঘুমিয়ে পড়ছে মানুষজন
রঙ্গীন হয়ে উঠছে বাতাসে
আর ইঙ্গিতের ভেতর গুটিসুটি মেরে
ঘুমিয়ে পড়ছে মানুষজন
স্বপ্নের ভেতর আলো, আলোর মধ্যে
বেঁকে ঢুকে যাওয়া রক্তের রেখা
আর সাদা এপ্রনে দাঁতের ডাক্তার
শেকড় অব্দি সেঁধিয়ে যাচ্ছে
বেঁকে ঢুকে যাওয়া রক্তের রেখা
আর সাদা এপ্রনে দাঁতের ডাক্তার
শেকড় অব্দি সেঁধিয়ে যাচ্ছে
আমার মুখ ভরে উঠছে শাঁখের গুড়োয়
পোড়া গন্ধে, কুলকুচি করে যন্ত্রণা
ফেলে দিচ্ছি আর ডুকরে উঠছি
যন্ত্রণার খুব বাইরে ক্ষতচিহ্নের
মত একা ও অধীর হয়ে উঠছ তুমি
পোড়া গন্ধে, কুলকুচি করে যন্ত্রণা
ফেলে দিচ্ছি আর ডুকরে উঠছি
যন্ত্রণার খুব বাইরে ক্ষতচিহ্নের
মত একা ও অধীর হয়ে উঠছ তুমি
তদোগেন গিরতের কবিতা-৪২
অথচ সে আমায় ঘুরে দাঁড়াতেই বলে
মৃদু অবসাদের তার পারফিউম
আর মাথা ঘুরিয়ে দেয়ার মত তার রক্তাল্পতা
ঘরের ভেতর থেকে একটা ভেজা কাঠের গন্ধ
ভবিষ্যতে চারিয়ে যায়
মৃদু অবসাদের তার পারফিউম
আর মাথা ঘুরিয়ে দেয়ার মত তার রক্তাল্পতা
ঘরের ভেতর থেকে একটা ভেজা কাঠের গন্ধ
ভবিষ্যতে চারিয়ে যায়
আর আমি কড়ি-কব্জায় তেল ঢালি
মচমচে সিঁড়ি দিয়ে সেই বাতাসে
ঘুরে বেড়াই, যে বাতাসে শ্বাস নিই
এই হাওয়া ও ছাইয়ের জগতে আমি বড়জোর
এক দিকনির্দেশ—রক্তশূন্য গাল ফুঁড়ে
মচমচে সিঁড়ি দিয়ে সেই বাতাসে
ঘুরে বেড়াই, যে বাতাসে শ্বাস নিই
এই হাওয়া ও ছাইয়ের জগতে আমি বড়জোর
এক দিকনির্দেশ—রক্তশূন্য গাল ফুঁড়ে
উত্তরের দিকে তাকিয়ে রয়েছি
তদোগেন গিরতের কবিতা-৪৩
আমার টেবিলে বসাবার মত ঈশ্বর পাচ্ছি
না
আমার বিছানায় শোয়াবার মত ঈশ্বর পাচ্ছি
না
দু’হাতে বুদ্বুদ সামলাতে সামলাতে দাঁড়িয়ে
রয়েছি
নিজের কবিতা হাতে সাবধানে দাঁড়িয়ে
রয়েছি
মোড়ক খোলা সাবানের সামনে হতবাক সাবান-ব্যাপারির মত
আর তোমরা ভেবে ফেলছ--এটাই আমার স্টাইল
পার্লামেন্ট থেকে হাওয়া আসছে
পাথর পার করে হাওয়া আসছে
সার্কাসের তাঁবু আর মাংসের দোকান
পার করে হাওয়া আসছে
কী ভীষণ হিংস্র
কী চমৎকার আমার নিঃসঙ্গতা
একরোখা বুদ্বুদ সামলে যাচ্ছি
নিজের কবিতা সামলে যাচ্ছি
তদোগেন গিরতের কবিতা-৪৪
কোত্থেকে এসেছ তুমি?
পেছন-বাগানের ধুলো-ধক্কড় থেকে?
খাটের নীচের তোরঙ্গ থেকে?
বসন্তের অ্যামস্টার্ডাম?
গলত পার্টির অপ্রস্তুত টাক্সিডো?
তুলোর ভাল্লুক?
অগ্নিনির্বাপক?
নাকী সেই তেতাল্লিশটা কবিতা--
যার আগাপাশতলা শুধু ভুলের ফিরিস্তি
ভুল, যে ভুল আমায় ভুট্টার চিপ্স
খেতে দেয়
কালো কফির সাথে, আর দুপুরে
মটর স্যুপের সাথে প্যান কেক
ভুল, যে ভুল সারাদিন
আমায় বসিয়ে রাখে পোর্চে
দোলনায় আর সারাক্ষণ আমাকে দিয়ে
প্রশ্ন করিয়ে যায়
দৃশ্য থেকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে
দিয়ে
আমাকে অবধারিত অন্ধ্বত্ব থেকে
প্রতিনিয়ত বাঁচিয়ে যায়...